৩৮ লক্ষ টাকা জরিমানা গুণেও ৯ ভবনে জ্বলছিল ২১৫ অবৈধ চুলা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

অবৈধভাবে লাইন তৈরি করে গ্যাস ব্যবহার করায় তিন বছর আগে জরিমানা গুণেছিল ইপিজেড থানাধীন চানখালী ব্যাংক কলোনী রোডের আমির সাধুর বাড়ির জনৈক ছৈয়দ নুরসহ আরো কয়েকজন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর দোষ স্বীকার করে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে পরের মাসে পুনঃসংযোগ নেন তারা। কিন্তু মোটা অংকের এই জরিমানা গুণেও থামেনি তাদের গ্যাস চুরি। উল্টো বৈধ চুলার দ্বিগুণ অবৈধ চুলা ব্যবহার করে ওখানকার প্রায় ৯টি ভবনের মালিকরা। গ্যাস চুরির সাথে জড়িত ভবন মালিকের সবাই একে অপরের পারিবারিক আত্মীয়।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার অনুমোদনহীন অবৈধভাবে গ্যাস চুরির অভিযোগে আমির সাধুর বাড়ির অভিযুক্ত ভবনগুলোতে সাঁড়াশি অভিযান চালায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল)। কর্ণফুলী গ্যাসের চারটি হাইপারফর্ম টিম ওই অভিযানে অংশ নেয়। দিনভর অভিযানে ৪৪১টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তারা। তন্মধ্যে ৫ রাইজারে ২২৬টি সংযোগের অনুমোদন রয়েছে। কেজিডিসিএল বলছে, ২০১৭ সালে গ্যাস চুরির অভিযোগে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর জরিমানা দিয়ে পুনঃসংযোগ নিয়ে পুনরায় আরো বেশি অবৈধ সংযোগ তৈরি করে গ্যাস ব্যবহার করে আসছিল। তিন বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার গ্যাস চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী গ্যাসের কর্মকর্তারা।
অভিযানে অংশ নেয়া কেজিডিসিএল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইপিজেড থানাধীন আমির সাধুর বাড়িটিতে বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। ওইসব ভবনে ৫টি রাইজারে ২২৬টি সংযোগের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু অভিযানে সংযোগ পাওয়া গেছে ৪৪১টি। বুধবারের অভিযানে সবগুলো সংযোগই বিচ্ছিন্ন করা হয়। তন্মধ্যে ৩২০ দুই বার্নার এবং ১২১টি এক বার্নারের সংযোগ পাওয়া গেছে। ভবন মালিকদের মধ্যে মো. সৈয়দ নুরের নামে দুটি, শাহাদাৎ বিন সৈয়দ, রিয়াদ উদ্দিন এবং ফসিউল আলমের নামে একটি করে রাইজার অনুমোদন রয়েছে।
কেজিডিসিএল মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী সারওয়ার হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদে একটি তথ্য পাওয়া যায় ইপিজেড থানার দক্ষিণ পাশের ব্যাংক কলোনি এলাকায় কিছু ভবনের বাসা বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাংক কলোনীতে সৈয়দ নুরসহ কয়েকভাই তাদের ভবনে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছে। তারা চুরি করে সংযোগগুলো ব্যবহার করলেও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে গ্যাস বিল আদায় করছিল।
আমরা রাতেই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে চারটি বিশেষ টিম গঠন করি। বুধবার চারটি টিম সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে। চতুর্দিকে ঘেরাও করে ৯টি ভবনে অভিযান চালানো হয়েছে। দিনভর অভিযানে ৪৪১টির সবগুলো সংযোগই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তন্মধ্যে চার জনের নামে ৫টি রাইজারে ২২৬টির অনুমোদন ছিল। তারা ২১৫টি চুলা অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছিল। এখন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ওখানে তিন বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার গ্যাস চুরি হয়েছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্ঘটনা কমলেও সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা
পরবর্তী নিবন্ধখুলশীতে স্ক্যাভেটর চাপায় শিশুর মৃত্যু