পেকুয়ার ৩৪ বছর আগে চাঞ্চল্যকর মিয়াজান হত্যা মামলার রায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর তিনজনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছে আদালত। গত সোমবার সকালে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুল এলাহীর আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সুলতান উল আলম।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এনামুল হক পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের রজিম পাড়া এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র। ঘটনার পর থেকে মামলার রায় ঘোষণার দিন পর্যন্ত তিনি পলাতক রয়েছেন। একই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মৃত এজাহার মিয়ার অপর পুত্র কামাল হোসেন, হাজী বাড়ির মো. ইউনুছ ও তার ভাই নুরুল ইসলাম। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো দুই বছরের সাজা দেয়া হয়।
এপিপি সুলতান উল আলম বলেন, ১৯৮৯ সালের ৮ জুলাই পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের কামাল হোসেনের হেফাজত থেকে ১৫ টুকরো বনজ গাছ জব্দ করে বনবিভাগ। টৈটং বনবিভাগের পাহারাদার হিসেবে স্থানীয় মিয়াজানের কাছে গাছগুলো জমা রাখা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন (৯ জুলাই) পাহারাদার মিয়াজানের উপর হামলা চালায় আসামিরা। এসময় কামাল হোসেনের ভাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এনামুল নিজে গুলি চালিয়ে হত্যা করে মিয়াজানকে। এ ঘটনার পরদিন (১০ জুলাই) নিহত মিয়াজানের চাচা গোলাম রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তা চাঞ্চল্যকর মিয়াজান হত্যা মামলায় ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। আসামি পক্ষের বারবার সময় আবেদনসহ নানা জটিলতায় মামলার কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে। আদালত ধাপে ধাপে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে সোমবার রায় ঘোষণা করেন।
চারজনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। চার্জশিটভুক্ত আরও ২৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ আসামি ইতিমধ্যে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। সাবেক দুই ইউপি সদস্য নবীর হোসাইন প্রকাশ নবু মেম্বার, নুরুচ্ছফা মেম্বার, চৌকিদার পাড়ার আমির হোসেন, রমিজ পাড়ার লাতু মিয়া, মৌলভীপাড়ার জামাল হোসেন, তার ভাই আনোয়ার হোসেনসহ ২২ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে মামলা থেকে। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট নাসির উদ্দিন।