রাজধানীর বারিধারা থেকে যুক্তরাজ্যের তৈরি রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। গাড়িটির আমদানিকারক নগরীর সিইপিজেডের জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড। কিন্তু গাড়ির আমদানিকারক শুল্ক পরিশোধ না করেই গাড়িটি ঢাকায় নিজ বাসায় নিয়ে যায়। শুল্ককরসহ গাড়িটির দাম পড়বে ২৭ কোটি টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এপ্রিলে গাড়িটি আমদানি করা হয়। এটি স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল ধরনের গাড়ি। এর উৎপাদন সাল ২০২১। মডেলের নাম কুলিনান এসইউভি। আমদানির পর গাড়িটি চট্টগ্রাম সিইপিজেডের কারখানায় নেয়া হয়। পরবর্তীতে কৌশলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গাড়িটি ঢাকার বারিধারায় বাসায় নিয়ে যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে চট্টগ্রাম ইপিজেডে অভিযান চালায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। কিন্তু তখন গাড়িটি ইপিজেডের কারখানায় পাওয়া যায়নি। এরপর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খানের নেতৃত্বে একটি দল গত সোমবার বারিধারায় ওই প্রতিষ্ঠানের এমডির
গ্যারেজে গাড়িটির সন্ধান পান। কাস্টমস শুল্কায়ন সম্পন্ন ও শুল্ক কর পরিশোধ না করে ব্যক্তিগত গ্যারেজে রেখে কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর বিধান লঙ্ঘন করায় গাড়িটি জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। এ ধরনের গাড়িতে শুল্কায়িত মূল্যের আট গুণ শুল্ককর দিতে হয়।
গাড়িটির বিষয়ে গতকাল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গাড়িটি এসআরও (স্ট্যারুচেরি রেগুলেটরি অর্ডারে) এবং কাস্টমস মূসক সিপিসি (কাস্টমস প্রসিডিউর কোড) ১৭০ এর আওতায় আমদানি করা। এই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসারে ২ হাজার সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানি শুল্কমুক্ত হবে। গাড়ির বনেটে থাকা স্টিকারে গাড়িটি ৬ হাজার ৭৫০ সিসি বলে উল্লেখ আছে। জব্দ গাড়িটি ২০০০ সিসির বেশি হওয়ায় শুল্ক মুক্ত সুবিধা প্রাপ্য না হলে সরকার ২৪ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। এছাড়া গাড়িটি সংশ্লিষ্ট এসআরও অনুসারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবে শুল্ক গোয়েন্দা। গাড়ি আমদানির পর দুই মাসেরও বেশি সময় পার হলেও গাড়িটির শুল্কায়ন কেন করা হয়নি তা নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তদন্ত চলমান বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, আমদানিকৃত গাড়িটির শুল্কায়নের বিষয়ে আমরা কিছু কাজ করছিলাম। আসলে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় হোক বা শুল্কায়ন যোগ্য হোক এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগেই গাড়িটি ইপিজেড থেকে ঢাকায় নেয়া বেআইনি।








