২০ হাজারের বেশি প্রার্থী অনুপস্থিত চট্টগ্রামে

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ।। নির্ধারিত সময়ে পৌঁছতে না পারায় কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি অনেকে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামসহ দেশের ২২টি জেলায় গতকাল (২২ এপ্রিল) প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে মহানগরের ৬৪টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে ছিল। প্রায় দেড় বছর পর অবশেষে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হল। তবে দীর্ঘ সময় পর অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী অনুপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার ৫৪ হাজার ৮৯৪ জন (প্রায় ৫৫ হাজার) প্রার্থী সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেন। তবে গতকাল অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৮৬ জন। বাকি ২০ হাজার ৪০৮ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। হিসেবে ৩৭ শতাংশ প্রার্থী এ নিয়োগ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ শতকরা ৬৩ শতাংশ প্রার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হৃষীকেশ শীল আজাদীকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় দেড় বছর পর এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সময়ে হয়তো অনেক প্রার্থীর অন্য জায়গায় চাকরি হয়ে গেছে। সবমিলিয়ে পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যাটা একটু বেড়েছে। এটি স্বাভাবিক বলেই আমরা মনে করছি।
নির্ধারিত সময়ে পৌঁছতে না পারায় কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি অনেকে : নির্ধারিত সময়ের পর পৌঁছানোয় গতকালের নিয়োগ পরীক্ষায় অনেক প্রার্থী কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি। সকাল সাড়ে দশটার পর নগরীর কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের প্রবেশ ফটকের সামনে জড়ো হয়ে ভুক্তভোগী অনেক প্রার্থীকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে মহিলা প্রার্থীদের চোখে পড়েছে বেশি। তবে পরীক্ষা গ্রহণের সাথে সংশ্লিষ্টদের দাবি- পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে আসন গ্রহণের নির্দেশনা ছিল। প্রার্থীদের সরবরাহ করা প্রবেশপত্রে স্পষ্ট ভাবে এই নির্দেশনা উল্লেখ রয়েছে। পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময় ছিল বেলা ১১টায়। নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল দশটার মধ্যে প্রার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণের কথা। কিন্তু সাড়ে দশটার পর যারা এসেছেন তারা কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ পাননি। কারণ ঠিক সাড়ে দশটায় কেন্দ্রের প্রবেশ ফটক বন্ধ করার নির্দেশনা ছিল। কেন্দ্রে এবং ফটকে দায়িত্বরতরা নির্দেশনা পালন করেছেন। তবে কেন্দ্রে ঢুকতে না পারা প্রার্থীদের অভিযোগ, দূরত্ব ও যানজটসহ বিভিন্ন কারণে অনেকের পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। তাও পরীক্ষা শুরুর ২০-২৫ মিনিট আগে তারা পৌঁছেছেন। কিন্তু তাদের ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। যা অমানবিক বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। কেউ আবার এটিকে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার অপব্যবহার বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক মহিলা প্রার্থীর অভিযোগ- তিনি ১০টা ৩২ মিনিটে এসে পৌঁছেছেন। এরপরও তাকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। যা অন্যায় ও অমানবিক।
চাকরি প্রার্থীদের দাবি- এটি প্রায় ২ বছর আগের নিয়োগ। যারা এ পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছেন, তাদের অধিকাংশেরই বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে হলেও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু সে সুযোগ তারা পাননি। দায়িত্বরতদের শত অনুনয়-বিনয় করেও মন গলাতে পারেননি। কেন্দ্রের ফটকে এসেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে একাধিক প্রার্থীকে কান্না করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণের নির্দেশনা ছিল। প্রবেশপত্রেও এ নির্দেশনা উল্লেখ আছে। এক ঘণ্টা আগে আসন গ্রহণের নির্দেশনা থাকলেও আরো আধ ঘণ্টা (সাড়ে দশটা পর্যন্ত) ফটক খোলা রাখা হয়। এরপরও কেউ যদি কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারেন তাহলে আমাদের কি করার আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুরুশকুলে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ গোলাগুলি
পরবর্তী নিবন্ধঘাট ইজারাদার ও চালককে গ্রেপ্তার দাবি