২০২১-২২ : এলসির মাধ্যমে আমদানি বেড়েছে ৪৬%

| সোমবার , ২৫ জুলাই, ২০২২ at ৪:১০ পূর্বাহ্ণ

গেল অর্থবছরে শুধু এলসি বা ঋণপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্যের জন্য বাংলাদেশকে ৮৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানির জন্য মোট ৯২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারের নতুন এলসি খোলা হয়েছিল, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে নতুন এলসি খোলা হয়েছিল ৬৭ বিলিয়ন ডলারের। আর এলসির মাধ্যমে পণ্য এসেছিল ৫৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের। তাতে এলসি নিষ্পত্তিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার পর তা দেশে আসতে ৪৫ দিন পর্যন্ত লেগে যায়। পণ্য আসার পরে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানিকারক বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ পরিশোধ করেন। এর মানে হল, পণ্য বুঝে পেয়ে তিনি অর্থ পরিশোধ করেছে। এটাকে এলসি নিষ্পত্তি বলা হয়। খবর বিডিনিউজের।
এলসির বাইরেও সরাসরি পণ্য আমদানি করে থাকেন উদ্যোক্তারা। সেই তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে কত টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে, সেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনও মেলেনি। বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি, অর্থাৎ বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ লেনদেনই হয় ডলারে। মহামারী কাটিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল হতে শুরু করলে গতবছর আমদানি বাড়তে থাকে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস থেকেই আমদানিতে এলসি খোলার হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাতে ডলারের চাহিদাও বেড়ে যায়। এরপর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় খরচ বেড়ে যায়। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে ডলারের দরে শুরু হয় অস্থিরতা। সে তুলনায় রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় না বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ভুগতে শুরু করে ব্যাংকগুলো, যা এক পর্যায়ে রিজার্ভেও টান দেয়। ডলারের লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত এপ্রিল থেকে বিলাস পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি শুরু করে। তারপরও এলসি নিষ্পত্তি ও খোলা- দুই হারই বৃদ্ধি পেয়েছে আগের চেয়ে। অর্থবছর শেষে এলসি খোলার হার দাঁড়িয়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ, আর নিষ্পত্তির হার দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। বিশাল এ দায় পরিশোধ করতে গিয়ে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের ঘাটতি ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এদিকে এলসির এ বিশাল দায় মেটাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি ও টাকার মান কমাতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। গত বছরের ১ আগস্ট ডলারের বিনিময় হার যেখানে ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায়, এ বছর ২১ জুলাই তা বেড়ে ৯৪ দশমিক ৪৫ পয়সা হয়েছে।
গতবছর আগস্ট মাসেই দেশের ইতিহাসে রিজার্ভের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ৪৮ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে তা কমছে। গত ২০ জুলাই তা নেমে এসেছে ৩৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফের ইউএনওর ভাষা মাস্তানের চেয়েও খারাপ : হাই কোর্ট
পরবর্তী নিবন্ধভূমিদস্যুমুক্ত করা হবে জঙ্গল সলিমপুর