কুমিল্লায় রড ভর্তি ট্রাক ছিনতাইয়ের জন্য এক ট্রাক চালককে হত্যার ঘটনার ১৬ বছর পর দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ মামলার আরেক আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সেলিনা আক্তার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিদের অনুপস্থিতিতে তিনি এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত তিন আসামিই জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার উত্তর চর লরেন্স গ্রামের আহসান উল্লাহ এবং চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ছিকনিয়া পূর্বটিলা এলাকার আবুল হোসেন। তাদের দুজনকে সর্বোচ্চ সাজার পাশাপাশি ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। আর দশ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মোহনপুর এলাকার শামসুল হককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে রায়ে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২০ জুন ফেনীর লেমুয়া ব্রিজ এলাকায় খুন হন ট্রাক চালক জয়নাল আবেদীন। তার বাড়ি ফেনীর পশুরাম উপজেলায়। এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান বাহার জানান, ঘটনার দিন রডবোঝাই ট্রাক নিয়ে যাত্রা করেছিলেন জয়নাল। ওই রড ‘লুট’ করার জন্য হেলপার আবুল হোসেনের যোগসাজশে ট্রাকে ওঠেন আহসান উল্লাহ। জয়নাল ট্রাক নিয়ে ফেনীর লেমুয়া ব্রিজ এলাকায় আসার পর তার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে এবং গালায় গামছা পেঁচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আবুল হোসেন এবং আহসান। আইনজীবী বলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগণ্ডায় এসে লাশ সড়কের পাশে ফেলে দেন তারা। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে শামসুল হকের দোকানে রড বিক্রি করে দেন। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার পর পুলিশ ট্রাকের ভেতরে তেলের ভাউচারের একটি সূত্র থেকে আহসান উল্যাহ, আবুল হোসেন ও শামসুল হককে গ্রেপ্তার করে।পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। ২০০৭ সালে ১ মার্চ আদালত আহসান উল্লাহ, আবুল হোসেন ও শামসুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য শুনে বিচারক বৃহস্পতিবার রায় দিল।