১৫ দিনের মধ্যে হাসপাতাল কলোনির স্টাফদের কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ

বাসার বরাদ্দ বাতিলে ক্ষোভ, আন্দোলনের হুমকি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর সিআরবিতে রেলওয়ের বিদ্যমান বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় ৫শ’ শয্যার বেসকারি হাসপাতাল ও ১শ’ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য হাসপাতাল কলোনিতে বসবাসরত স্টাফদের কোয়ার্টারকে পরিত্যক্ত জায়গা দেখিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনেকের বাসা বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাসরত কর্মচারীদের অন্যত্র বাসা বরাদ্দ না দিয়ে হুট করে তাদের বাসা বরাদ্দ বাতিল করায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অন্যত্র বসবাস উপযোগী বাসা বরাদ্দ না দিয়ে উচ্ছেদ করলে তারা আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। গতকাল সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে তারা তাদের এই ক্ষোভের কথা জানান। যাদের বাসা বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে তাদেরকে টাইগারপাস এলাকায় যেসব খালি কোয়ার্টারে যেতে বলা হয়েছে তা বসবাসের অনুপযোগী বলে দাবি করেছেন কোয়ার্টারে বসবাসকারী রেলওয়ের উচ্চমান সহকারী (সিপিও অফিস) শান্তনু দাশ ও পাহাড়তলী কারখানার কর্মচারী এরশাদুল ইসলাম।
বাসযোগ্য বাসস্থানের সুব্যবস্থা না করে রেলওয়ের বরাদ্দকৃত কর্মচারীদের উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন রেলওয়ের সকল শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কাছে স্মারকলিপি দিয়ে দেখা করেছেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন, রেলওয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ও কর্মচারী দল, রেলওয়ে জাতীয় শ্রমিক পার্টি, রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগ, রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কর্মচারী ইউনিয়নসহ সব সংগঠনের নেতারা। নগরীর সিআরবির এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের জমিতে গড়ে তোলা হবে ৫০০ শয্যার একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং একশ’ আসনের একটি মেডিকেল কলেজ। বিদ্যমান রেলওয়ে (বক্ষব্যাধি) হাসপাতাল সংলগ্ন ৬ একর জমি জুড়ে এই হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলছে ইউনাইটেড গ্রুপ। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)’র আওতায় রেলওয়ের জমিতেই এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় ‘স্টাবলিস্টমেন্ট অব এ ফাইভ হান্ড্রেড বেড মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটাল এ্যান্ড এ হান্ড্রেড সিট মেডিক্যাল কলেজ অন বাংলাদেশ রেলওয়ে সাইট ইন চিটাগাং’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোঃ আহসান জাবির আজাদীকে বলেন, ‘হাসাপাতাল কলোনির স্টাফ যাদেরকে কোয়ার্টার ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে তাদেরকে ১ মাস সময় দেয়া হয়েছে। পুরো নভেম্বর মাস। আর তাদের জন্য আমাদের টাইগারপাস এলাকায় ১৯৫টি খালি বাসা রয়েছে। সেখানে তাদেরকে যেতে বলা হয়েছে। বাসাগুলো বসবাসের অনুপযোগী বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। ১৯৫টি বাসায় তারা ৮ পরিবার ৮টি ভালো বাসা খুঁজে পাচ্ছে না এটা ঠিক নয়।’
হাসপাতালের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা জমি বুঝিয়ে দিলে কাজ শুরু হবে। ৬ একর জমি দুই ধাপে দেয়া হবে। প্রথম ধাপে ২ দশমিক ৪২ একর জমি দিলে কাজ শুরু হবে ফেব্রুয়ারিতে। ২য় ধাপে বাকি ৩ দশমিক ৫৮ একর জমি বুঝিয়ে দেয়া হবে। আর ৫০০ শয্যার হাসপাতালটি নির্মাণে মোট ৫ বছর সময় পাবে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে প্রথম তিন বছরের মধ্যে ২৫০ শয্যার নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। আর পরবর্তী ২ বছরে শেষ করতে হবে বাকি ২৫০ শয্যার নির্মাণ কাজ। তবে একশ’ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনে ১০ বছর সময় পাবে প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তির মেয়াদ (৫০ বছর) শেষে এসব প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের মালিকানায় আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই প্রকল্পে রেলের স্বার্থ সবোর্চ্চ পর্যায়ে দেখা হয়েছে। এই ৬ একর জমির মূল্য বাবদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৮ কোটি টাকা প্রদান করেছে। প্রতি বছর রেলকে দেয়া হবে দেড় কোটি টাকা করে। এছাড়া রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই হাসপাতালে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টে চিকিৎসা সেবা পাবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবশেষে বাইডেনকে অভিনন্দন জানাল চীন
পরবর্তী নিবন্ধফের মিয়ানমারের ক্ষমতায় সুচির দল