১৫ দিনেই হাজার মৃত্যু

মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ১৪ হাজার

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২৭ জুন, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ১৫ দিনেই এক হাজার রোগীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ১১ জুন ১৩ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল ২৬ জুন এই সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছার তথ্য আসে।
বছর গড়িয়ে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত এপ্রিলে পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার পর ১০ দিনে ১ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর এখনই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার ফলে আগামীকাল সোমবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধে দেশ অচল রেখে সংক্রমণ রোখার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৮ জনে। মৃত ৭৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৮ জন ও ২৯ জন নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৬৮। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৮৫৪ জন।
সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৫৪টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৮৪৪টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৬২টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৮১টি।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে। এই সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১৮ কোটিতে। বাংলাদেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস। মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল।
তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল। দিনে মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর ওপরে। শুক্রবার আবার দৈনিক মৃত্যু শত ছাড়িয়ে ১০৮-এ গিয়ে পৌঁছায়।
মৃত্যুর লিঙ্গ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে এই পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তার ৭১ শতাংশই পুরুষ, নারী ২৯ শতাংশের মতো। মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১০ হাজার ৪৩ জন। নারী ৪ হাজার ১০ জন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃতদের ৫৬ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব। ২৪ শতাংশের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ২০ বছরের নিচে বয়সীদের মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। ঢাকা বিভাগে ৭ হাজার ৪৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ৬৭০, রাজশাহী বিভাগে ৯৬১, খুলনা বিভাগে ১ হাজার ১৩৩, বরিশাল বিভাগে ৪১৪, সিলেট বিভাগে ৫১৮, রংপুর বিভাগে ৫৬৯, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৯৯ জন মারা গেছে মহামারীতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত আরো ২১৬
পরবর্তী নিবন্ধচসিকের বাজেট ঘোষণা আজ