১১৬ স্থানে সাঁটানো যাবে পোস্টার

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানা দেয়াল; আড়াল হয়ে যায় বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন বা রাজনৈতিক শুভেচ্ছা সম্বলিত সাঁটানো পোস্টারে। বাদ যায় না শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং পাড়ার অলিগলির খালি জায়গাও। যত্রতত্র সাঁটানো এ সব পোস্টারে ঘটে শহরের সৌন্দর্যহানি। একইসঙ্গে রাজস্ব হারায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে এবার যত্রতত্র পোস্টার সাঁটানো রোধের উদ্যোগ নিয়েছে চসিক। এর অংশ হিসেবে পোস্টার লাগানোর স্থান নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে সংস্থাটি। এ জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে ১১৬টি স্থান। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৬০ থেকে ৭০টি স্থানে পোস্টার লাগানোর জন্য অবকাঠামো করে দেয়া হবে। অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে নির্ধারিত ফি দিয়ে পোস্টার সাঁটানো যাবে। আগামী মাস থেকে নির্দিষ্ট স্থানে পোস্টার সাঁটানো কার্যক্রম শুরু হবে। যা দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে প্রথম। এর মধ্য দিয়ে যততত্র পোস্টার সাঁটানো বন্ধের পাশাপাশি রোধ হবে নগরের সৌন্দর্যহানি। বাড়বে চসিকের রাজস্বও।
উল্লেখ্য, সিটি কর্পোরেশন কর আইন-১৯৮৬ অনুযায়ী, শহরে ব্যানার ফেস্টুন লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট ফি দিয়ে অনুমতি নিতে হবে সিটি কর্পোরেশন থেকে। এ ক্ষেত্রে ৬ বর্গফুটের একটি পোস্টারের জন্য দৈনিক ১০ টাকা এবং ১০ বর্গফুটের পোস্টারের জন্য দৈনিক সাত টাকা পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। যদিও বাস্তবে সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিয়ে কেউ পোস্টার সাঁটান না। ফলে রাজস্ব বঞ্চিত হয় চসিক।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট স্থানে পোস্টার লাগানোর বিষয়টি কীভাবে পরিচালিত হবে তা চূড়ান্ত করতে আগামীকাল রোববার বৈঠকে বসবেন সিটি মেয়রসহ কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এ কার্যক্রম আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নাকি ঠিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে তা চূড়ান্ত করা হবে ওই বৈঠকে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, তালিকা চূড়ান্ত করেছি। ১১৬টির তালিকা হলেও প্রথমে ৬০ থেকে ৭০টি স্থানে কার্যক্রম শুরু করব। সেখানে ১২ বাই ৮ ইঞ্চির একটা অবকাঠামো থাকবে। নির্দিষ্ট জায়গাটিতে কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে পোস্টার লাগানো যাবে। এর বাইরে লাগালে আমরা জরিমানা করব। ফি কত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে মেয়র বলেন, আগামী মাস থেকে এটা বাস্তবায়ন করব।
পোস্টার সাঁটানোর জন্য তালিকা প্রস্তুত করেছেন সিটি মেয়রের একান্ত সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাশেম। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা প্রথমে জরিপ করে দেখেছি কোথায় কোথায় পোস্টার লাগানো হয় এবং কারা বেশি পোস্টার লাগায়। এর মধ্যে ৯০ ভাগই পোস্টার হচ্ছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে এমন স্থানগুলোতে পোস্টার বেশি সাঁটানো হয়। এরপর গ্রোথ সেন্টার বা যেখানে লোক সমাগম বেশি হয় সেখানে পোস্টার সাঁটানো হয়। ওই হিসেবেই আমরা তালিকা করেছি। তিনি বলেন, কার্যক্রম শুরু হলে দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে চসিকই প্রথম প্রতিষ্ঠান হবে যারা পোস্টার সাঁটানো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে পেরেছে।
চিহ্নিত স্থানগুলো : চসিকের প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী, অঙিজেন মোড় দুটি, বায়েজিদ বোস্তামি গেটের পাশে একটি জায়গা নির্দিষ্ট থাকবে পোস্টার সাঁটানোর জন্য। অন্যান্য স্থানগুলো হচ্ছে, শেরশাহ মোড়, টেকনিকেল মোড়, নয়াহাট মোড়, বহদ্দারহাট মোড় (২টি। পুলিশ বিট ও ওয়েলফুড সংলগ্ন), কাপ্তাই রাস্তার মাথা (পুলিশ বিট সংলগ্ন ফুটপাত), চান্দগাঁও থানার মোড় (বাস কাউন্টারের বিপরীতে) মুরাদপুর দুটি (যাত্রীছাউনির পাশে ও মুরাদপুর থেকে অঙিজেনমুখী রোডের মুখে), হামজারবাগ মোড়, বিপ্লব উদ্যান (উত্তর-পশ্চিম কোণ), দুই নম্বর গেট ( কবরস্থান সংলগ্ন যাত্রীছাউনির পাশে), জিইসি মোড় তিনটি (জিইসি কনভেনশনের সামনে যাত্রী ছাউনি সংলগ্ন, সেন্ট্রাল প্লাজায় প্রবেশ মুখে ক্যান্ডি সংলগ্ন, জিইসি মোড়ের উত্তর- পশ্চিম কোণায় হাউজিংয়ের দেয়ালে), সুগন্ধার মুখে (মির্জারপুল), ওমেন কলেজের গেটের পাশে, একে খান মোড়, কর্নেলহাট বাজার, ১১নং ওয়ার্ড অফিস সংলগ্ন, ১২নং ওয়ার্ড ( কাঁচা রাস্তার মাথা), ১২নং ওয়ার্ড চাউল বাজার, ওয়ার্লেস মোড়, লালখান বাজার দুটি (যাত্রী ছাউনির পাশে ও চানমারি রোডে প্রবেশ মুখে), গোলপাহাড় মোড়, বাওয়া স্কুল ও কলেজ গেটের পাশে, শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন, কাজির দেউড়ি মোড় (দক্ষিণ-পূর্ব কোণায়), আউটার স্টেডিয়ামের কোণায় (পুলিশ বঙ সংলগ্ন), স্টেডিয়াম মসজিদের পিছনের অংশে ফুটপাত, ওয়াসার মোড়, গুলজার মোড় দুটি (চকবাজার চকসুপার মার্কেট সংলগ্ন মোড়, প্যারেড মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণ), চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসীন কলেজের গেট সংলগ্ন ফুটপাত, চকবাজার কাঁচাবাজার (ধুনির পুল সংলগ্ন, অলি খাঁ মসজিদের বিপরীতে মেডিকেলগামী সড়কের মুখে, চট্টগ্রাম মেডিকেলের পূর্বগেট সংলগ্ন ফুটপাত, চমেক প্রধান ফটক সংলগ্ন ফুটপাত, প্রবর্তক মোড় (উত্তর-পশ্চিম পাশে), কালামিয়া বাজার, কল্পলোক আবাসিকের গেট, চান্দগাঁও আবাসিকের মাঠ সংলগ্ন ফুটপাত, আন্দরকিল্লা মোড়ে দুটি (চসিকের বাউন্ডারি ও মসজিদের সিঁড়ি সংলগ্ন), চেরাগী পাহাড় মোড়, জামালখান মোড়, সি আর বি, টাইগারপাস মোড় (পুলিশ বিট সংলগ্ন), ডিসি হিল গেট সংলগ্ন, দেওয়ানহাট মোড়, চৌমুহনী মোড়, বেপারিপাড়া মোড় (চসিক অফিস সংলগ্ন), বাদামতল মোড়ে দুটি, বড়পুল দুটি, মা ও শিশু হাসপাতালের গেট সংলগ্ন, আগ্রাবাদ শিশুপার্ক ও জাম্বুরি পার্ক সংলগ্ন সুবিধাজনক স্থানে, নয়াবাজার মোড়, পিসি রোড (বিজিবির রাস্তা নির্দেশক সাইনবোর্ড সংলগ্ন, ২৬ নং ওয়ার্ড), ২৯ নং ওয়ার্ড অফিস সংলগ্ন, ইসলামিয়া কলেজ মোড়, সিটি কলেজ গেট, নিউ মার্কেট মোড়ে ৪ টি, আমতল, মিউনিসিপ্যাল স্কুল গেট, রেল স্টেশনে দুটি, রেয়াজুদ্দিন বাজার সংলগ্ন, কোতোয়ালী মোড়, কোর্ট বিল্ডিং তিনটি, জহুর হকার্স মার্কেট গেট, লালদীঘি মসজিদ সংলগ্ন, টেরিবাজার মোড় (পুলিশ বিট সংলগ্ন), ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড অফিস সংলগ্ন, গীর্জার মোড়, চার্চের গেট সংলগ্ন, আনসার ক্লাব মোড়, নতুন ব্রিজ এলাকায় দুটি, নিমতলা মোড়, বন্দর ও কাস্টমস অফিস সংলগ্ন সুবিধাজনক স্থানে, সল্টগোলা ক্রসিং, ইপিজেড মোড়ে দুটি, নেভি কলেজ গেট সংলগ্ন, আকমল আলী রোডের মুখে, সিমেন্ট ক্রসিং, স্টিল মিল বাজার, কাটগড়, সিবিচে দুটি, বিমানবন্দর ও নেভাল এরিয়ায় দুটি, বোটক্লাব এরিয়া, কাপাসগোলা মোড়, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া গেট, কাতালগঞ্জ ইবনে সিনা ল্যাব সংলগ্ন, গণি বেকারি, হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ গেট, এমএইএস কলেজ গেট, পোর্ট স্টেডিয়াম গেট, অলংকার মোড়, সিডিএ মার্কেট, কে ব্লকের মুখে সিলভার বেলস্‌ স্কুল গেট, মিমি সুপার ও আগোরার পাশে সুবিধাজনক স্থানে, জামালখান সিপিডিএল অফিস সংলগ্ন, সিনেমা প্যালেস এলাকা, চান্দগাঁও ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ গেট, বিএড কলেজ গেট, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার গেট সংলগ্ন, মেরিন সিটি মেডিকেলগামী রোডের মুখে টেঙটাইল মোড়, ফিনলে ও মিনাবাজার সংলগ্ন খালি জায়গায় সুবিধাজনক স্থান, শপিং কমপ্লেঙের পিছনে পার্কিং এরিয়া, স্যানমারের সামনে, সিঙ্গাপুর -ব্যাংকক মার্কেটের সামনে, হালিশহর বিডি আর মাঠ এলাকা, আগ্রাবাদ ২৪ তলা ভবনের সামনে, কমার্স কলেজ গেট, জেনারেল হাসপাতালের সামনে, গরিবুল্লা শাহ মাজার এরিয়া ও দামপাড়া বাসস্ট্যান্ড এরিয়া, ডিটি রোড পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন, গোলজার মোড় থেকে মেডিকেল হোস্টেলে যাওয়ার পথে হাতের বাম পাশে খালি জায়গা এবং বহদ্দারবাড়ি পুকুরের পাশের ফুটপাত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপিকে হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর মহানুভবতা