১০ উইকেটের জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো বাংলাদেশ

মোস্তাফিজের রেকর্ড গড়া বিধ্বংসী বোলিং

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৬ মে, ২০২৪ at ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারিয়ে বসা হতভম্ব বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে। হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ স্টেডিয়ামে মোস্তাফিজের রেকর্ড গড়া বিধ্বংসী বোলিংয়ে টিটোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৫০ বল হাতে রেখেই ১০ উইকেটে হারিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রকে। যুক্তরাষ্ট্রের করা ১০৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে তুলে নেয় ১০৮ রান। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম আর সৌম্য সরকার মিলেই ম্যাচ শেষ করে দেন। তানজিদ ৪২ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় খেলেন ৫৮ রানের হার না মানা ইনিংস। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ৪৩ রানে। তিনি ৪টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কা হাঁকান।আগেই দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খুইয়েছিল টাইগাররা। শেষ ম্যাচটা ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশন। আর সেই মিশনে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। সিরিজের ব্যবধান হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ২১। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র গতকাল অধিনায়ক, ওপেনার, আগের দুই ম্যাচের জয়ের নায়ক এই চারজনকে ছাড়াই খেলতে নামে। টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত ব্যাট করতে পাঠান যুক্তরাষ্ট্রকে। তারা ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রানের সংগ্রহ পায়। প্রথম সারির চার ক্রিকেটারকে বসিয়ে দেয়া যুক্তরাষ্ট্র শুরুটা ভালো করে। প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩৫ রান তোলে তারা। পঞ্চম ওভারেও সাকিবকে ছক্কা হাঁকান দলটির ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর। এক বল পর সাকিবের বলে ক্যাচ ছেড়ে দেন গৌওসের ক্যাচ ছেড়ে দেন শান্ত। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। সাকিবের বলেই লং অফে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন গৌওস। ১৫ বলে ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রান করেন তিনি। ভেঙে যায় ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে আরেক ওপেনার জাহাঙ্গীরকেও ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো তানজিম হাসানের হাতে ক্যাচ দেন জাহাঙ্গীর। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ১৮ রান করেছিলেন তিনি। দুই ওপেনারকে হারানোর পর অনেকটাই খেই হারিয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংসও। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। তৃতীয় উইকেটিও পান মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৯ বলে ৩ রান করা নিতিশ কুমার। উইকেট পান আরেক পেসার তানজিম হাসান সাকিবও। ৭ বলে ২ রান করে তার বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। আগের ওভারে ক্যাচ ধরা রিশাদ হোসেন পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজেই উইকেট পান। ২০ বল খেলে স্রেফ ৭ রান করা মিলিন্দ কুমারকে আউট করেন তিনি। মাঝে কোরি এন্ডারসন এসে ইনিংস গোছানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ১৮তম ওভারে এসে দুই উইকেট নেন মোস্তাফিজ। প্রথমে ১২ বলে ১৭ রান করা ভ্যান স্কালওয়েকে আউট করেন। এরপর ১৮ বলে ১৮ রান করা অ্যান্ডারসন হয়ে যান বোল্ড। শেষ ওভার করতে এসে জাতিন্দর সিংকে বোল্ড করে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন মোস্তাফিজ। শেষে তার বলে ক্যাচ দেন নিশারাগ প্যাটেলও। ৬ বলে ২ রান করেছিলেন তিনি। এই উইকেট নিয়ে একটি রেকর্ডেও নাম লেখান মোস্তাফিজ। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ছয় উইকেট পেলেন তিনি। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে স্রেফ ১০ রান দিয়ে ৬ উইকেট পান মোস্তাফিজ। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৬ সালে ২২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট ছিল তার সেরা বোলিং ফিগার। মোস্তাফিজ ছাড়াও ১টি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব, সাকিব আল হাসান এবং রিশাদ হোসেন। মোস্তাফিজের চেয়েও বেশি কৃপণ ছিলেন রিশাদ। মিতব্যায়ী বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়েছেন তিনি।

গতকাল ম্যাচ সেরার পুরস্কারের সাথে সাথে সিরিজ সেরার পুরস্কারও হস্তগত করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতশো উইকেটের মাইল ফলকে সাকিব
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরে এলার্ট-৩ জারি