ভারতের প্রথম চিফ অভ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত তামিলনাড়ুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর এমআই সেভেনটিন ভি৫ হেলিকপ্টারটি আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুন্নুরের গভীর জঙ্গলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আগুন ধরে যায়। হেলিকপ্টারটির ১৪ জন আরোহীর মধ্যে বেঁচে গেছেন মাত্র একজন।
দুর্ঘটনার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক টুইটে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়।
সেখানে বলা হয়, “গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, দুর্ভাগ্যজনক ওই ঘটনায় জেনারেল বিপিন রাওয়াত, মিসেস মধুলিকা রাওয়াত এবং হেলিকপ্টারে থাকা আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।”
আরোহীদের মধ্যে বেঁচে গেছেন কেবল গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুন সিং। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ওয়েলিংটনের সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আজ বুধবার সকালে দিল্লি থেকে আকাশ পথে কোইমবাটোরের সুলুর সেনাঘাঁটিতে গিয়েছিলেন জেনারেল রাওয়াত।
দুপুরে সেখান থেকে নীলগিরির ওয়েলিংটনের ডিফেন্স স্টাফ কলেজে যাওয়ার পথে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি কুন্নুরে দুর্ঘটনায় পড়ে।
তার পিএসও, সিকিউরিটি কমান্ডো এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা ছিলেন ওই হেলিকপ্টারে।
টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে পাহাড়ের ধারে ছড়ানো ছিটানো কপ্টারের ধ্বংসাবশেষ জ্বলতে দেখা যায়। গাঢ় ধোঁয়া আর উপড়ানো গাছের কারণে উদ্ধারকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কৃষ্ণস্বামী নামে কুন্নুরের এক বাসিন্দা আনন্দবাজারকে বলেছেন, “প্রথমে একটা কানফাটানো আওয়াজ শুনতে পেলাম। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতেই দেখতে পেলাম, হেলিকপ্টারটি প্রচণ্ড গতিতে প্রথমে একটি গাছে ধাক্কা মারল। তারপরই দেখতে পেলাম একটা আগুনের গোলা। পরমুহূর্তেই সেটা সজোরে আরও একটি গাছে ধাক্কা মারল। দেখলাম, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই কপ্টারটি থেকে দুতিন জন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাদের গোটা শরীরই পুড়ে গিয়েছে ততক্ষণে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দিল্লিতে জেনারেল রাওয়তের বাসভবনে ছুটে যান। সেখানে তিনি প্রতিরক্ষা প্রধানের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে।
৬৩ বছর বয়সী জেনারেল রাওয়াত ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধান বা চিফ অভ ডিফেন্স স্টাফের দায়িত্ব নিয়েছিলেন; সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করতেই পদটি সৃষ্টি করা হয়।
নতুন সৃষ্ট সামরিক বিষয়ক বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এই চার তারকা জেনারেল।