হের্মান এমিল ফিশার : সুগার রসায়নের জনক

| শুক্রবার , ১৫ জুলাই, ২০২২ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

হের্মান এমিল ফিশার। একজন জার্মান রসায়নবিদ। তিনি কার্বহাইড্রেট সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ১৯০২ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৮৭৫ সালে তিনি ফিনাইল হাইড্রাজিন প্রস্তুত করেন যা অ্যালডিহাইড ও কিটোনের সাথে বিক্রিয়া করে নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক বিশিষ্ট হাইড্রাজোন উৎপন্ন করে। তিনি এ বিকারক ব্যবহার করে সুগার রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। সুগারের গাঠনিক সংকেত নির্ণয়ে ও সংশ্লেষণে তার ব্যাপক অবদানের জন্য তাকে ‘সুগার রসায়নের জনক’ বলা হয়। ফিশার এস্টারিফিকেশন আবিষ্কারের কারণে তিনি সমধিক পরিচিত। ১৮৫২ সালের ৯ অক্টোবর হের্মান এমিল ফিশার জার্মানির ইউস্কিরচেনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৭৪ সালে ফিশার স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চাকরিজীবন শুরু করেন। ১৮৭৫ সালে ফিশার মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়নের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮৭৮ সালে ফিশার বিশ্লেষণধর্মী রসায়নের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৮৮১ সালে তিনি এর্লাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮৮৫ সালে তাকে উর্জবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের অধ্যাপক পদে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত চাকরিরত থাকেন। পরে তিনি রসায়নের চেয়ারম্যান পদে এই. ডব্লিউ. হফম্যানের স্থলাভিষিক্ত হন এবং ১৯১৯ সাল পর্যন্ত এই পদে বহাল থাকেন। ১৮৮৪ সালে ফিশার তার বিখ্যাত সুগার রসায়ন সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করেন, যা এ সকল পদার্থ সম্পর্কিত জ্ঞানকে এক নতুন মাত্রা প্রদান করে এবং এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। ১৮৯০ সালে তিনি গ্লুকোনিক ও ম্যানোইক এসিডের এপিমেরিজেশনের মাধ্যমে সুগারের সমাণু ও স্টেরিও রসায়ন প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৯১ হতে ১৮৯৪ সালের মধ্যে ফিশার পরিচিত সকল সুগারের স্টেরিও রাসায়নিক বিন্যাস বের করেন এবং বিজ্ঞানী জ্যাকোবাস হেনরিকাসের অপ্রতিসম কার্বন পরমাণু তত্ত্বের সুপ্রযুক্ত প্রয়োগের মাধ্যমে সঠিকভাবে এদের সমাণুর ভবিষ্যদ্বাণী করতে সমর্থ হন। ফিশার তার অবদানের জন্যে ইংল্যান্ডের ক্রিস্টিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রাসেলস বিশ্ববিদ্যালয় হতে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯০২ সালে তিনি সুগার রসায়ন ও পিউরিন সংশ্লেষণে বিশেষ অবদানের জন্য রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯১৯ সালের ১৫ জুলাই জার্মানের বার্লিন শহরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষকদের ওপর হামলা বন্ধ করুন