সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে টোল প্লাজায় ফল দোকানী ফরিদ শেখকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মেদের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়। নিহত ফরিদ শেখের পিতা সুলতান মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান আদালত। খবর বাসসের।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ৪ জুলাই ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে বিকাল সাড়ে ৩টায় যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোল প্লাজার দক্ষিণ পার্শ্বের রাস্তায় পুলিশের গুলিতে ফরিদ শেখ গুরুতর আহত হন। শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পরেন। আশেপাশের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফরিদ শেখকে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। গুলি ফরিদ শেখের পাকস্থলির ডান পাশে লেগে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৬ আগস্ট সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ফরিদ শেখ মৃত্যুবরণ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে জনগনকে হত্যা, গুম, শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধ করেছে। তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে, বাংলাদেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করা।
অন্য আসামিদের পরামর্শে ১ নম্বর আসামি শেখ হাসিনা তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে আসছিলেন। শেখ হাসিনাকে তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানা টেলিফোন, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে গনহত্যা করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ডাক–টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন–অর–রশিদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিপ্লব কুমার, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত এবং যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান । এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।