হাসান হাফিজুর রহমান : প্রগতি চেতনায় সমুজ্জ্বল

| বৃহস্পতিবার , ১ এপ্রিল, ২০২১ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

হাসান হাফিজুর রহমান। বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সমালোচক। কর্মে ও চিন্তায় তিনি ছিলেন প্রগতিমনস্ক। সাধারণ মানুষের সংগ্রামী জীবনচেতনার মূর্ত প্রকাশ ঘটেছে তাঁর অধিকাংশ রচনায়। হাসান হাফিজুর রহমানের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৪ই জুন জামালপুরে। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম. এ ডিগ্রি অর্জন করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দালনে ছিল তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ।
ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম সংকলন ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ তাঁর সম্পাদনাতেই প্রকাশিত হয়েছিল। বৈচিত্র্যময় কর্মজীবনে হাসান হাফিজুর রহমান পত্রিকায় সাংবাদিকতা ও সম্পাদনা করেছেন, কিছুকাল অধ্যাপনা করেছেন জগন্নাথ কলেজে। মস্কোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রেস কাউন্সিলর হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন। পেশাগত কাজের পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা এবং প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জড়িত ছিলেন তিনি। পাকিস্তানি শাসক চক্র রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্র সংগীত প্রচার বন্ধের ঘৃণ্য সিদ্ধান্ত নিলে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নেন হাসান হাফিজুর। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাঙালি সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন আজীবন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বিশেষ অবদান ছিল।
হাসান হাফিজুর রহমানের বিভিন্ন গ্রন্থাবলীর মধ্যে ‘বিমুখ প্রান্তর’, ‘বজ্রে চেরা আঁধার আমার’, ‘আরো দুটি মৃত্যু’, ‘যখন উদ্ধত সঙ্গীন’, ‘শোকার্ত তরবারি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ১৬ খণ্ডে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: দলিলপত্র’ সম্পাদনা। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ‘পাকিস্তান লেখক সংঘ পুরস্কার’, ‘আদমজি পুরস্কার’, ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’, ‘নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক’, ‘একুশে পুরস্কার’ [মরণোত্তর] সহ নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল হাসান হাফিজুর রহমান প্রয়াত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বাধীন দেশের জন্য
পরবর্তী নিবন্ধকরোনা কি পরিশুদ্ধ করতে পারেনি এখনো