পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ। কিছুক্ষণ পরেই সহপাঠিদের সাথে কেন্দ্রে যাবেন। হঠাৎ খবর আসে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা আর বেঁচে নেই। তখনই অজ্ঞান হয়ে যান খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার। দ্রুত তাকে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করানো হয়। পরে পানছড়ির থানার ওসির সহায়তায় হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় সুমাইয়া। পানছড়ি উপজেলা সদরের সাঁওতাল পাড়ার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি এসএসসি পরীক্ষায় পানছড়ি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তার মা।
মায়ের মৃত্যুর শোকে এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া হাসপাতালে এমন খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন পানছড়ির থাকার অফিসার ইনচার্জ মো. আনচারুল করিম। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যান ওসি। মায়ের লাশ যখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তখন বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সুমাইয়া আক্তার।
পানছড়ি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলি চাকমা বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তার খেয়াল রেখেছি। তবে পরীক্ষা দিতে এসে তার কোনো অসুবিধা চোখে পড়েনি। আমি তাকে শান্ত হয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছি।
পানছড়ি থানার ওসি মো. আনচারুল করিম বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। মায়ের মৃত্যুতে জ্ঞান হারানো মেয়েটিকে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় আমি নিজেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে পরীক্ষার টেবিলে বসিয়ে দিয়ে আসি। এটা আমি দায়িত্ব মনে করেই করেছি। তাকে সাহস জুগিয়েছি এবং দুজন পুলিশ সদস্যকে সার্বক্ষণিক তার পাশে থাকার ব্যবস্থা করেছি।












