হামলা দ্বিগুণ করেছে রাশিয়া

মারিউপোলের পতনের শঙ্কা বাড়ছে ফের শান্তি আলোচনা, বৈঠকে বসবেন না পুতিন

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ২৯ মার্চ, ২০২২ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আগ্রাসনের দ্বিতীয় মাসে কৌশলগতভাবে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে দ্বিগুণ হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। রাজধানী কিইভের চারপাশে তুমুল লড়াই চলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অবরুদ্ধ মারিউপোলও পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। রুশ বাহিনী এরই মধ্যে এই নগরীর কিছু এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ইউক্রেনের সেনারা এখনও সেখানে অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে কতক্ষণ তাদের প্রতিরোধ টিকে থাকবে সেটিই এখন প্রশ্ন। এদিকে যুদ্ধবিরতির জন্য তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ‘শান্তি আলোচনায়’ বসতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শান্তি আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়ে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে সেই আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। গত এক মাসে যুদ্ধের যে পরিস্থিতি তাতে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, রুশ বাহিনী দ্রুত ইউক্রেনের বড় বড় নগরী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেওয়ার যে প্রাথমিক লক্ষ্য ঠিক করেছিল তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। রুশ বাহিনী এখন পর্যন্ত দক্ষিণের নগরী মারিউপোল এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নগরী চেরনিহিভ অবরুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। রাজধানী কিইভে দিনের বেলা বিমান হামলার সাইরেন বাজছে ঠিকই। ওই সাইরেনের আওয়াজ ছাড়া নগরী বর্তমানে শান্তই আছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও সম্প্রতি জানানো হয়েছে, পূর্ব ফ্রন্টের দিকে অধিক মনযোগ দিতে তারা কিইভ থেকে সেনাদের সরিয়ে নিচ্ছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, রুশ সেনারা এখন উত্তরে বেলারুশের দিকে সরে যাচ্ছে। যাতে তারা পুনরায় একত্রিত হতে এবং রসদ সংগ্রহ করতে পারে। তবে এখনো চেরনিহিভ এবং কিইভের উত্তরপূর্বে রুশ সেনারা ভারি গোলা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
শান্তি আলোচনায় বসছে ইউক্রেন-রাশিয়া : যুদ্ধবিরতির জন্য তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ‘শান্তি আলোচনায়’ বসতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। ইউক্রেনে নতুন করে সংঘাত বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই দুই পক্ষ এই বৈঠকে বসার বিষয়ে সম্মতির কথা জানিয়েছেন।
তুরস্কের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সোমবার ইস্তাম্বুল শহরে দুই পক্ষ শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে। এর আগে রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোনে কথা বলেন এবং আজকের বৈঠকে বসার ব্যাপারে সম্মত হন।
এরদোগানের দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, টেলিফোন আলাপে তুর্কি প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে তার দেশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে রুশ প্রেসিডেন্টকে জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধ বন্ধ এবং মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্কের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো রকমের বিলম্ব ছাড়া দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার দরকার এবং এ জন্য তিনি বেশকিছু আপসরফারও ইঙ্গিত দেন।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন না পুতিন : যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শান্তি আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়ে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে সেই আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে এখনই আলোচনার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে ল্যাভরভ বলেন, তাদের মধ্যে তখনই আলোচনা হওয়া উচিত, যখন মূল ইস্যুতে একমতের কাছাকাছি পৌঁছানো যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির বেশিরভাগ সমাবেশেই গণ্ডগোল হয় : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬