হাজী শরীয়তুল্লাহ : ফরায়েজি আন্দোলনের মহানায়ক

| শনিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ

হাজী শরীয়তুল্লাহ (১৭৮১১৮৪০)। বাংলার একজন ইসলামি সংস্কারক। তাঁর নামানুসারে শরিয়তপুর জেলার নামকরণ করা হয়েছে। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন মাদারীপুর মহকুমাধীন (বর্তমানে জেলা) শ্যামাইল গ্রামের তালুকদার পরিবারে ১৭৮১ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

১৭৯৯ সালে তিনি মক্কা গমন করেন এবং ১৮১৮ সালে বাংলায় ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি আরবের তৎকালীন ওহাবী আন্দোলনের অনুরূপ ইসলামি সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন। যা পরবর্তীকালে ফরায়েজী আন্দোলন নামে পরিচিতি পায়। শরীয়তুল্লাহর সংস্কার আন্দোলন ছিল মূলত ধর্মীয়। ১৭৯৯ থেকে ১৮১৮ সাল পর্যন্ত আরবে তাঁর অবস্থানকালে সৌদি শক্তির উত্থান ও পতন এবং ‘মাওয়াহিদুন’ বিপ্লব অর্থাৎ তথাকথিত ওহাবীবাদের চূড়ান্ত বিকাশ ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশে হাজী শরীয়তুল্লাহর জীবনের ব্রত ব্যর্থ প্রমাণিত হয়।

তাঁর মৌল মতবাদের প্রচারণা জনসাধারণকে আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয় এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে তিনি পুনরায় মক্কা গমন করেন। তিনি শিক্ষক তাহের সোম্বলের নিকট সুফিবাদের কাদেরিয়া তরিকায় দীক্ষিত হন এবং ১৮২০ সালে পুনরায় বাংলায় ফিরে আসেন।

এ পর্যায়ে ফরায়েজী নামে পরিচিত তাঁর সংস্কার আন্দোলন ফরিদপুর ছাড়াও বৃহত্তর ঢাকা, বরিশাল ও কুমিল্লা জেলায় দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তিনি ইসলামের অবশ্য পালনীয় ধর্মীয় কর্তব্য বা ‘ফরজ’ পালনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন।

যেমন, দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ধর্মীয় কর বা ‘যাকাত’ প্রদান করা, রমজান মাসে ‘রোজা’ রাখা, ‘হজ্ব’ পালন করা ইত্যাদি। এ থেকেই হাজী শরীয়তুল্লাহর আন্দোলন ‘ফরায়েজী আন্দোলন’ নামে পরিচিত হয়। তাঁর সমসাময়িক ধর্ম প্রচারক মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী এ বিষয়ে শরীয়তুল্লাহর প্রবল বিরোধিতা করেন এবং বাংলার ‘খারিজি’ হিসেবে তাঁকে অভিযুক্ত করেন। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে হাজী শরীয়তুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক চাই