হাইড্রেন্ট আছে, পানি নেই

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

মঙ্গলবার মধ্যরাত। ঘটনাস্থল আন্দরকিল্লা মোড়। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোতে ক্রমাগত বাজছে কলজে হিম করা হুইসেল। তীব্র আতংক চারদিকে। আগুনের লেলিহান শিখা সক্রোধে আকাশ ছুঁতে চাচ্ছে। দাউ দাউ করা এই শিখা দমানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে পানি। কিন্তু পানি নেই কোথাও। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোতে থাকা পানি অল্পক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। নতুন পানির উৎসের খোঁজে ফায়ার সার্ভিস এবং রেডক্রিসেন্টের কর্মীরা কাঁধে পাইপ নিয়ে ছোটাছুটি করছেন। অথচ মাত্র কয়েক গজের মধ্যেই রয়েছে ওয়াসার হাইড্রেন্ট। লাল রঙের হাইড্রেন্ট মাথা উঁচু করে নিজের অবস্থান জানান দিলেও তাতে পানি ছিল না।

চট্টগ্রাম ওয়াসা বলেছে, নগরজুড়ে ১৪৪টি হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৫০টি হাইড্রেন্ট চালু করা হয়েছে। বাকিগুলো ক্রমান্বয়ে চালু হবে। ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ডিস্ট্রিক্ট মিটারিং এরিয়া বা ডিটিএম নামের এই প্রকল্প চালু হলেই নগরীর সব হাইড্রেন্ট চালু হবে যাবে। এগুলোতে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ থাকবে। মুখের গেট বাল্ব অপারেট করার মতো যন্ত্রপাতি আমরা ফায়ার সার্ভিসকে দিয়ে দিয়েছি। প্রতিটি হাইড্রেনের সঙ্গে ৮০ মিলিমিটারের (তিন ইঞ্চিরও বেশি) পাইপ লাইন রয়েছে। যেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস অনায়াসে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করতে পারবে। হাইড্রেন্টের সঙ্গে পাইপ লাগিয়ে ওয়াসা মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি বাউচার ভর্তি করতে পারবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। হাইড্রেন্টগুলো শহরের মূল সরবরাহ লাইনের সাথে হওয়ায় এখানে পানির অত্যধিক প্রেসার থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা বেশ কিছু হাইড্রেন্ট চালু করেছি। কিছু টেকনিক্যাল কাজের কারণে বাকিগুলো এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। অচিরেই এসব হাইড্রেন্ট চালু করে দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আন্দরকিল্লা মোড়ে একটি হাইড্রেন্ট থাকলেও এটি এখনো চালু করা হয়নি। ফলে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে আগুনের সময় এই হাইড্রেন্ট থেকে কোনো পানি পাওয়া যায়নি। পানির জন্য ফায়ার সার্ভিসকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

পৃথিবীর উন্নত বিশ্বে তো বটেই, আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোতেও বড় বড় শহরে ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজন মেটাতে হাইড্রেন্ট নির্মাণ করে রাখা হয়। রাস্তার পাশে হাইড্রেন্ট থাকে। যেখানে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের কাছে এই হাইড্রেন্টের চাবিসহ গেট বাল্ব খোলার ইকুইপমেন্ট থাকে। থাকে প্রশিক্ষণ। প্রয়োজনের সময় ফায়ার সার্ভিস এই হাইড্রেন্ট খুলে প্রয়োজনীয় পানি নিয়ে নেয়। এতে করে পানির উৎসের জন্য ফায়ার সার্ভিসকে অন্য কারো উপর নির্ভর করতে হয় না। কোন অনিশ্চয়তাও থাকে না। দূরে কোথাও যেতে হয় না। ঘটনাস্থলের পাশেই হাইড্রেন্ট থাকে। ওখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নিভানোর কাজ চালানো হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ভাষা শহীদদের স্মরণ
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি যে অত্যাচার করেছে, আমরা তার কিছুই করি না : শেখ হাসিনা