করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িতে থাকা বয়স্ক রোগীদের দ্রুত সেরে উঠতে সহযোগিতা করে হাঁপানি বা অ্যাজমার একটি ওষুধ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, এই ওষুধ সেবনের ফলে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির চেয়ে অন্তত তিন দিন আগে রোগীরা সুস্থ হতে পারেন। ওষুধটি ব্যবহারের ফলে করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও কমে আসতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস (এনএইচএস) জানিয়েছে, রোগীভেদে করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধটি ব্যবহার করা যাবে। বাড়িতে থাকা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্যারাসিটামল ছাড়া তেমন কোনো ওষুধ নেই। বিশ্বে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ে হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যার অভাব হছে। এই পরিস্থিতিতে কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতে রেখে কী কী উপায়ে সারিয়ে তোলা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখতেই এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। অক্সফোর্ড গবেষকদের গবেষণা প্রতিবেদনটি একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় হাঁপানির কম দামি ওষুধ বিউডেসোনাইড প্রয়োগ করে একটি হিউম্যান ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়। এই পরীক্ষা চালানো হয় ৫০ বছর এবং ৬৫ বছরোর্ধ্ব ১৭০০ জন কোভিড রোগীদের ওপর। যাদের বেশিরভাগই আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িতেই ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি হননি। বাজারে চালু হাঁপানির ওষুধগুলোর মধ্যে তুলনায় কম দাম এই ওষুধের। হাঁপানির রোগীরা ওষুধটিকে শ্বাসের সঙ্গে শরীরে টেনে নেন।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, দিনে দু’বার ৮০০ মিলিগ্রাম করে করে টানা দু’সপ্তাহ ধরে ‘বিউডেসোনাইড’ দেওয়া হলে কোভিড রোগীরা আরও তাড়াতাড়ি সেরে উঠছেন। পরে ২৮ দিন ধরে তাদের আবার দেওয়া হয় ‘বিউডেসোনাইড’। অন্য চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর চেয়ে অন্তত ৩ দিন আগে তারা সেরে উঠতে পারছেন। সেরে ওঠার পরেও তারা অন্যভাবে সেরে ওঠা কোভিড রোগীদের তুলনায় বেশি সুস্থবোধ করছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমারি কেয়ার বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস বাটলার বলেন, আরও বেশি আশার কথা হলো হাঁপানির এই ওষুধটি মানব শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রবীণ রোগীদের ৩২ শতাংশই হাঁপানির এই ওষুধটি শরীরে টেনে ১৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন পুরোপুরি। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির সাফল্যের হার ২২ শতাংশ।