হত্যা মামলায় সাক্ষী দেওয়ায় গৃহবধূ লায়লাকে হত্যা

প্রধান আসামি মীরসরাইয়ে গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

হত্যা মামলায় পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন গৃহবধূ লায়লা। মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য দেন তার স্বামী ও ছেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা তাদের বসতভিটায় গিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত লায়লা হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। এ ঘটনায় জড়িত মূল আসামি ইরানকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের একটি টিম। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ইছাখালী ভাবীর মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই ঘটনায় অভিযুক্ত ইরানের দুই ভাই মো. আরমান (৩৫) ও ইমতিয়াজ (৩২) পলাতক রয়েছেন। ইরান নগরীর ইপিজেড থানার ২ নম্বর মাইলের মাথা মহব্বত মুন্সীর বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত আবুল বশর। খুন হওয়া লায়লা বেগম একই এলাকার কবির আহম্মদের স্ত্রী। ইরানের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় দুটি হত্যাসহ চারটি মামলা আছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।
র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ জানান, ২০০৯ সালের ১১ এপ্রিল ইরান, তার দুই ভাই আরমান ও ইমতিয়াজ মিলে তাদের আপন মামাতো ভাই এরশাদকে ইপিজেড থানার মাইলের মাথা মহিউদ্দিনের গ্যারেজের সামনে মারধর করে। এরশাদের বাড়ি ছিল তাদের পাশাপাশি। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত এরশাদকে ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার পরদিন তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ইরান ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। বাড়ির সীমানা নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের কথা এবং হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের আরও তথ্য পুলিশের কাছে প্রকাশ করেন এরশাদের চাচি লায়লা বেগম। পুলিশ ইরান, আরমান ও ইমতিয়াজকে গ্রেপ্তার করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয় ইরানের পরিবার। তারা লায়লাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।
প্রায় ৫ বছর আগে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় আদালতে। আসামিরা তখন থেকে লায়লা এবং তার স্বামী-সন্তানকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু হুমকি উপেক্ষা করে গত নভেম্বরে লায়লা বেগমের স্বামী কবির আহম্মদ (৬৫) ও ছেলে ওমর ফারুক (৩১) এরশাদ হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন, যা তিন ভাইকে আরও ক্ষিপ্ত করে তুলে।
এরশাদ খুনের মামলায় তিন ভাই এক বছরেরও বেশি সময় জেল খেটে জামিনে বের হয়। বেরিয়েই আসামি ইরান, তার দুই ভাইসহ অন্যান্য সহযোগীরা মিলে ১ জানুয়ারি ইপিজেড থানা এলাকায় লায়লা বেগমের বসতভিটায় হামলা চালায়। হামলায় লায়লা বেগম ও তার ছেলে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ৬ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন লায়লা বেগম। ঘটনার পর তিন ভাইসহ অন্যারা পালিয়ে যায়। পালিয়ে গেলেও ইরানের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গতকাল ভোরে মীরসরাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান
পরবর্তী নিবন্ধরায় হতে পারে এ মাসে