পটিয়া, হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ডে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বাসের ধাক্কায় পটিয়ায় মোটরসাইকেল আরোহী, হাটহাজারীতে পথচারী বৃদ্ধ ও সীতাকুণ্ডে এক স্কুল শিক্ষকসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। দৈনিক আজাদীর প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন।
পটিয়া : পটিয়ায় রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার পথে দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। তার নাম মো. নুরুল আমিন পিন্টু (৪৫)। তিনি উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন গ্রামের মৃত হাফেজ এখলাছের পুত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার হরিণখাইন গ্রামের নুরুল আমিন পিন্টু পটিয়ার শান্তিরহাট থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কুসুমপুমরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এলাইন ট্রান্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের একটি মিনি বাস তাকে চাপা দেয়। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আকবর জানান, নিহত পিন্টু মইজ্জ্যার টেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় কুসুমপুরা ইউনিয়নের আবদুল ওহাব জামে মসজিদ মাঠে নামাজে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ওসি স্নেহাংশু বিকাশ সরকার জানিয়েছেন, পিন্টু রাস্তা পার হওয়ার সময় কক্সবাজারগামী দ্রুতগতির দুটি বাস যাচ্ছিল। এসময় একটি বাস দেখলেও অপরটি তিনি খেয়াল করতে না পারায় ওই বাসের ধাক্কায় রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে নিহত হন। এ ঘটনায় বাসটি আটক রয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
হাটহাজারী : হাটহাজারীতে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় জগির আহমদ (৫৭) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। গত বুধবার দুপুরে হাটহাজারী–অক্সিজেন মহাসড়কের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত জগির উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সহয্যে পাড়া এলাকার লাতু সিকদার বাড়ির মৃত সালেহ আহমদের পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফতেপুরের মদনহাট এলাকার একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন জগির আহমদ। উক্ত স্থানে পৌঁছলে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি বাস (চট্টমেট্রো–জ ১১–১৫৮৬) সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে জগির আহমদ গুরুতর আহত হয়। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে রাউজান হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. কামরুল আজম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকেলে ও রাতে উপজেলার বার আউলিয়াস্থ ফুলতলা এবং ফৌজদারহাট এলাকায় এঘটনা ঘটে। জানা গেছে, বুধবার বিকেলে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বারআউলিয়াস্থ ফুলতলা এলাকায় একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় হুমায়ুন আহম্মেদ (৩৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে।
নিহতের চাচা জিনারুল ইসলাম জানান, হুমায়ুন বারআউলিয়া থেকে সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থল শীতলপুর আবুল খায়ের স্টিলে যাওয়ার সময় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হুমায়ুন চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানার নতিপোতা ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের শফিক আহম্মেদের পুত্র। তিনি আবুল খায়ের রোলিং মিলে মেকানিকেল ফিটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে একইদিন রাত পৌনে ৮টার সময় উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় চট্টগ্রামমুখী শ্যামলী পরিবহন বাসের ধাক্কায় মো. নুরুল ইসলাম (৫৫) নামে এক স্কুল শিক্ষক নিহত হয়েছেন। তিনি রাউজানের হলদিয়া উত্তর সর্তা গ্রামের তোতা গাজীর বাড়ির মো. ইদ্রিসের পুত্র।
জানা যায়, শিক্ষক নুরুল ইসলাম স্কুলের পরীক্ষার খাতা কলেজিয়েট স্কুলে জমা দিয়ে ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
দুই দুর্ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।