চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, বর্তমান সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় চট্টগ্রাম নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ওয়াসার উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে যাচ্ছে। নগরীর খাল ও পুকুর ভরাট হওয়ায় পানির উৎস কমে আসছে। অপরদিকে নগরায়ণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে ভবিষ্যতে পানি সংকট দেখা দিতে পারে। তাই পানি ব্যবহারে সতর্ক ও সাশ্রয়ী হতে হবে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ব্যবহারের ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ সাশ্রয়ী করা হলে এই পদ্ধতি অধিক কার্যকর হবে। গত বুধবার সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘প্রসপেক্টস এন্ড চ্যালেঞ্জেস অফ আরবান রেইনওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেমস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে স্যুয়ারেজ ও ড্রেনেজের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। নগরীকে ছয়টি ভাগে ভাগ করে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে একটি কাজ শুরু হয়েছে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে পরিকল্পনার কাজ শেষ হবে। যেকোন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য প্রকৌশলীদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে, এক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সেমিনার উপ–কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহানের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী আয়েশা আক্তার।
সেমিনারে কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। কেন্দ্রের কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী শেখ রাব্বি তৌহিদুল ইসলাম মূল প্রবন্ধকারের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী আয়েশা আক্তার বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় ভূগর্ভস্থে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে জনভোগান্তি বাড়ছে। এক্ষেত্রে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও ঘাটতি পূরণের সহায়ক হিসেবে এবং বর্ষাকালে নগরীর আকস্মিক জলাবদ্ধতা নিরসনে বাড়ির ছাদে বৃষ্টি পানি সংরক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। মহানগরীকে ২২ টি ভাগে ভাগ করে মোট এক লাখ ৭৬ হাজার তিনশ ৫৪টি ভবনের ছাদে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার সম্ভাবনা নিয়ে জরিপ চালানো হয়। জরিপে দেখা যায় এসব ভবনে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হলে নগরীর মোট পানির চাহিদার ১৩.৩ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে।
সেমিনারে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রকৌশলী সুভাষ চক্রবর্তী, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, প্রকৌশলী সুমন বসাক, প্রকৌশলী কাজী আরশাদুল ইসলাম ও প্রকৌশলী শাহে আরেফীন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন ও প্রকৌশলী সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী, কেন্দ্রের প্রাক্তন ভাইস–চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ এস এম নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, পিইঞ্জ. প্রকৌশলী উদয় শেখর দত্ত ও প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ সেমিনারে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন প্রকৌশলীসহ কেন্দ্রের বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।