স্মার্টফোন ও আমাদের প্রজন্ম

আলী আকবর বাবুল | শুক্রবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ফলে মুঠোফোন আরও আধুনিক ও স্মার্ট চেহারা নিয়ে আমাদের মধ্যে স্মার্টফোন নামে আবির্ভূত হয়েছে। মুঠোয় নিয়ে চলার জন্য হাতে উঠেছে স্মার্ট চেহারার মুঠোফোন। এখন স্মার্টফোনে আমরা কী না করতে পারি? সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষায় ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ভাইবার, জুম ইত্যাদি আর্থিক লেনদেনে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা থেকে শুরু করে, ব্যাকআপ বা তথ্য সংরক্ষণ, খেলাধুলা, টিভি, বিনোদন, চিঠিপত্র, কেনাকাটা, পরিবহন টিকেট, নিজের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর, চলাফেরায় জিপিএস রোড ম্যাপ, বাজারের ফর্দ, ভর্তি, ক্লাসরুটিন, এলার্ম ইত্যাদি সবকিছুই হচ্ছে স্মার্টফোনে। দৈনন্দিন জীবনের শত শত কাজ এই স্মার্টফোন যন্ত্র দিয়ে সহজে অনায়াসেই করা যাচ্ছে। বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে মানুষের দৈনন্দিন জীবন এখন অনেকটা স্মার্টফোন নির্ভর।

অনেকে স্মার্টফোনকে আধুনিকতার মাপকাঠি মনে করেন। এমনকি দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও খুব কমই লোক পাওয়া যাবে যার হাতে একটি স্মার্টফোন নেই।

আমরা শুনি অনেক মাবাবা গর্ব করে বলেন আমার ছেলে/মেয়ে অনেক মেধাবী, মোবাইলের ব্যাপার সে আমার চেয়েও ভালো বোঝে। আবার এ যুগের বাচ্চারা নাকি ফোন হাতে না দিলে খেতেই চায় না। ইউটিউবে ভিডিও খোঁজে বের করা কোনো ব্যাপারই না। নাহ, এটা বিশেষভাবে বলার কিছু নয়, গর্বের কোনো ব্যাপার নয়। বরং নিজের সন্তানের বিপদ আপনি নিজেই ডেকে আনছেন।

চতুর্থ প্রজন্মের জীবনধারা এখন অনেকটাই যান্ত্রিক বানিয়ে দিয়েছে এই স্মার্টফোন। নানা রকমের গেমস এর প্রতি তাদের আসক্তি বেড়ে গেছে। আগেকার দিনে বিকেলে মাঠে ময়দানে তরুণদের বিভিন্ন খেলায় ব্যস্ত দেখা যেত। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হত, অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকত। এখন আর সে দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না।

স্মার্টফোন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলা এবং ছবি দেখার সুযোগ থাকায় এখন সামাজিক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক আস্তে আস্তে দুর্বল হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমে গুজব রটিয়ে, ফেইক আইডি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এ গেজেট ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রেম নামক ছলনার আশ্রয় নিয়ে আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও সংগ্রহ করে তা পাবলিকলি প্রচার করে সংসারে ভাঙ্গন ধরানো হচ্ছে বা মুক্তিপন আদায় করা হচ্ছে। পরকিয়া এখন সাধারণ ব্যাপার, পরিবারের সম্প্রীতি নষ্ট হয়ে প্রতিদিন পরিবার ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সুষ্ঠু পদক্ষেপ চাই
পরবর্তী নিবন্ধছোট বা বড় সবার কথা গুরুত্ব দিতে হয়