স্বামী-সন্তান প্রবাসে, তবুও গৃহকর্মী সেজে চুরি

২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকাসহ নারী গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

পরিচয় গোপন করে গৃহকর্মী সেজে একটি বাসায় স্বর্ণ ও অর্থ চুরির অভিযোগে বিবি কুলসুম (৪৫) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই নারীর স্বামী ও ছেলে প্রবাসে থাকার পরও ওই নারী বিভিন্ন সময় চুরির কাজে জড়িত বলে জানায় পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল কোতোয়ালী থানা পুলিশ নগরীর ঘাটফরহাদ বেগে একটি বাসার মালিকের দায়ের করা চুরির মামলায় অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার কুলসুম চট্টগ্রাম লোহাগাড়া উপজেলার নোয়ারবিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, গত ৩ নভেম্বর ঘাটফরহাদবেগ এলাকার এক বাসায় ৫০ ভরি অলঙ্কার ও নগদ দুই লাখ চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বাসার মালিক গৃহকর্মী হাসিনা বেগম প্রকাশ আছিয়াসহ দুই তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। দেড় মাস তদন্ত শেষে গত ১৭ ডিসেম্বর ওই গৃহকর্মীকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি জানান, নগরীর ঘাটফরহাদবেগের যে বাড়িতে চুরি হয়েছিল সেখানে মূলত কুলসুম পরিচয় গোপন করে হাসিনা বেগম নামে পরিচয় দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ নিয়েছিল। এ সময় তার বাড়ির ঠিকানা দেয়া হয়েছিল বাঁশখালীতে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই আইয়ুব উদ্দিন জানান, গত বছরের নভেম্বরে বাকলিয়া থানার তুলাতলি এলাকায় ভিক্ষুকের বেশে একটি বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল কুলসুম। লকডডাউন শুরুর কিছু দিন পর কুলসুম ওই বাসা থেকে চলে গিয়েছিল এবং অক্টোবরের শেষ দিকে আবার এসে থাকতে চায়। কিন্তু সে বাসায় জায়গা না পেয়ে পাশের আরেকটি বাসায় সাবলেট হিসেবে থাকে।
এসআই আইয়ুব বলেন, তুলাতলিতে যে বাসায় থাকত তাদের বাড়ি বাঁশখালীতে। তাদের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ঘাটফরহাদবেগের বাসাটিতে কাজ নেয় কুলসুম। আর যে মহিলার মাধ্যমে ঘাটফরহাদবেগের বাসাটিতে কাজ নিয়েছিল তাকে সে জানিয়েছিল স্বামী তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে সে। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ওই নারীকে ধরে আনার পরও বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করে।
গত ১৮ ডিসেম্বর কুলসুমকে হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এসময় তার বাড়ি থেকে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এসআই আইয়ুব বলেন, কুলসুমের স্বামী থাকেন সৌদি আরবে, আর ছেলে থাকেন দুবাইয়ে। তবে এটা তার দ্বিতীয় স্বামী। স্বামী ও সন্তানের সাথে তেমন যোগাযোগ তার নেই। তার স্বামী ৬ বছর ধরে দেশে আসছে না। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ওই নারী যখন শহরে আসে তখন গ্রামের অনেকেই মনে করত তার শহরে বাড়ি আছে।
ওসি মহসিন বলেন, চুরির টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারগুলো বাড়ির খাটের নিচে এবং বিভিন্ন হাড়ি পাতিলে রেখেছিল সে।
এ ধরনের কাজ কুলসুম আগেও করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু ধূর্ত প্রকৃতির কুলসুম অনেক বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে। গ্রেপ্তারের পর কুলসুম পুলিশকে জানিয়েছে, সে চট্টগ্রাম নগরীতে এসে নাম পরিচয় গোপন করে নিজেকে অসহায় হিসেবে তুলে ধরে উচ্চবিত্ত পরিবারে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয়। কিছুদিন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার পরে সুযোগ বুঝে সে চুরি করে গ্রামে ফিরে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৮ জানুয়ারি থেকেই প্রচার প্রচারণা
পরবর্তী নিবন্ধকরোনার কাছে হার মানলেন চমেকের আরো এক চিকিৎসক