সৈকতে ছবি তুলে জোরপূর্বক অতিরিক্ত বিল আদায়, ফটোগ্রাফার আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ১৮ জুলাই, ২০২২ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নামার পথে পর্যটকদের ঘিরে ধরে লাল জার্সিধারী ফটোগ্রাফাররা। ‘ডিএসএলআর ক্যামেরা, বড় ল্যান্স, খুব সুন্দর ছবি তুলে দেব। প্রতি ছবি ৩ টাকা করে দিলে হবে। ছবি পছন্দ না হলে ডিলিট করে দেবো’- এমন হরেক রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে অতিরিক্ত ছবি তুলে পর্যটকদের ঘাড়ে বিলের বোঝা চাপিয়ে দেন এই ফটোগ্রাফাররা। তাদের বিরুদ্ধে পর্যটকদের এ ধরনের হয়রানি করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গতকাল রোববার (১৭ জুলাই) সকালে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে পর্যটক হয়রানির অভিযোগে মো. ইউনুস নামের এক ফটোগ্রাফারকে আটক করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তার ফটোগ্রাফ পোশাক নম্বর ৫৯২।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, মো. সিফাত মাহমুদ নামের এক পর্যটক তার স্ত্রীকে নিয়ে সৈকতে যান। সেখানে ক্যামেরাম্যান ইউনুছের অনুরোধে তারা কয়েকটি ছবি তুলতে রাজি হন। কিন্তু সিফাতের অমতে প্রায় আড়াইশ ছবি তুলে ৮শ টাকা বিল দাবি করেন ওই ফটোগ্রাফার। সিফাত অতিরিক্ত বিল পরিশোধে অপারগতা জানালে ওই ফটোগ্রাফার জোরপূর্বক সেই বিল আদায় করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশকে অভিযোগ জানালে সকালে শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট সমুদ্র সৈকত থেকে ওই ফটোগ্রাফারকে আটক করা হয়।

ভুক্তভোগী পর্যটক সিফাত জানান, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শনিবার সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে বেড়াতে যান। সেখানে ফটোগ্রাফার ইউনুছের জোরাজুরিতে তারা ৩০/৪০টি ছবি তুলতে রাজি হন। কিন্তু ওই ফটোগ্রাফার প্রায় আড়াইশ ছবি তুলে ৮শ টাকা বিল দাবি করেন। তিনি অতিরিক্ত বিল দিতে অপরাগতা জানালে ওই ফটোগ্রাফার তাকে নানা হুমকি ধমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি সেই বিল পরিশোধে বাধ্য হন। এরপরে বিষয়টি ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানালে তারা ওই ফটোগ্রাফারকে গ্রেপ্তার করে।

কঙবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান বলেন, কঙবাজার সৈকতে বৈধ-অবৈধ হাজারখানেক ক্যামেরাম্যান রয়েছেন; যাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ছবি তুলে জোর পূর্বক বিল আদায়ের অভিযোগ হরহামেশা শোনা যায়। পর্যটকদের নামার পথে তাদের ঘিরে ধরে প্রায় উত্ত্যক্ত করেন এই ফটোগ্রাফাররা। বিষয়টি পর্যটকরা প্রায়ই আমাদের অভিযোগ করেন।

কঙবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, ফটোগ্রাফারদের লাইসেন্স দেয় জেলা প্রশাসন। যে কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে এ বিষয়ে কোনো ডাটাবেজ নেই এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। পুলিশ একটি ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি খুব শিগগিরি ডাটাবেজ তৈরির কাজ শেষ করতে পারবো।

ফটোগ্রাফারদের হাতে পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে লক্ষ্যে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, সৈকতের প্রত্যেকটি পয়েন্টে আমাদের হেল্প ডেস্ক রয়েছে। ট্যুরিস্টরা যে কোনো হয়রানি বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে যাতে সহজেই ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নিতে পারেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসালেহ মোহাম্মদ তানভীরের বিদায়
পরবর্তী নিবন্ধস্বর্ণের দাম কমলো ভরিতে ১১৬৬ টাকা