সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

ক্রীড়া প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মিনিটখানেক বাকি। জয়ের সুবাস বইছে আর্জেন্টিনা শিবিরে। ঠিক ওই সময়ে দুর্দান্ত এক গোলে সব হিসাব এলোমেলো করে দিল নেদারল্যান্ডস। ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও মিলল না ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোল।
অবশেষে টাইব্রেকার। নায়ক বনে গেলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। প্রতিপক্ষের দুটি শট ঠেকিয়ে দলকে তুলে নিলেন কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। লুসাইল স্টেডিয়ামে গতকাল দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ২-২ গোলে শেষ হয়। পরে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জিতে উল্লাসে মাতে আর্জেন্টিনা।
লুসাইল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরু থেকেই ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করে আর্জেন্টিনা। বলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে ধীরে ধীরে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা আর্জেন্টিনার। যদিও গোলে শট নিতে ২১ মিনিট লেগে যায় মেসিদের। নেদারল্যান্ডসের ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসির নেওয়া শট চলে যায় ক্রসবার উঁচিয়ে। ২৫ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত নেদারল্যান্ডস। কিন্তু বারগুইনের শট চলে যায় সাইডবার ঘেঁষে। ৩৩ মিনিটে ডি পল যে শট নিয়েছিলেন তা ধরে নিতে মোটেও কষ্ট হয়নি ডাচ গোলরক্ষকের। ৩৬ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ডাচ ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসি তিনজনকে কাটিয়ে দিলেন চুল ছেঁড়া পাস। বিদ্যুৎ গতিতে এগিয়ে গিয়ে মলিনা বাঁ পায়ের টোকায় বলটা কেবল জালে পাঠালেন। উল্লাসে মাতে আর্জেন্টিনা।
৩৯ মিনিটে গোলদাতার খাতায় নাম লেখাতে পারতেন মেসিও। বাম প্রান্ত থেকে আলভারেজের বাড়ানো বলে মেসি যে শট নেন তা চলে যায় নেদারল্যান্ডস গোলরক্ষকের হাতে। ম্যাচের বাকি সময়ে আর গোল করতে পারেনি কোনো দলই। নেদারল্যান্ডসও পারেনি গোল করার মতো তেমন কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতে। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। যদিও প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল নেদারল্যান্ডস। কিন্তু আক্রমণ আর সুযোগ সৃষ্টিতে এগিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ফলে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তারা এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে নেদারল্যান্ডস চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে। কিন্তু আর্জেন্টিনা কৌশলী। নিজেদের
রক্ষণভাগ সুরক্ষিত রেখে আক্রমণের চেষ্টা। আর সে সুবাধে ৬১ মিনিটে ডাচ ডি বঙের সামনে মেসিকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির কিক চলে যায় ক্রসবারে বাতাস লাগিয়ে। ব্যবধান আর দ্বিগুণ হয়নি। ৭১ মিনিটে নিজেদের ডি বঙের সামনে ওটামেন্ডিকে ফাউল করেন এক ডাচ ডিফেন্ডার। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। আর সে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি।
গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠা নেদারল্যান্ডস একের পর এক আক্রমণ রচনা করতে থাকে। ৮২ মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান কমায় নেদারল্যান্ডস। ডান প্রান্ত থেকে উড়ে আসা ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়ান ওয়েগহর্সট। ব্যবধান দাড়ায় ২-১। পরের মিনিটে আরো একটি সুযোগ পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস সমতা ফেরানোর। কিন্তু সেটি চলে যায় বাইরে। এরপর দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতা দেখা যায়। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। নেদারল্যান্ডস মুহুর্মুহু আক্রমণে তটস্থ করে রাখে আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করতে পারেনি।
একেবারে শেষ মিনিটে শেষ সুযোগটা পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস। আর্জেন্টিনা ডিবঙের সামনে ফ্রিকিক পায় ডাচরা। আর সেটা থেকে গোল করে সমতা ফেরায় নেদারল্যান্ডস। সেই ২-২ গোলে সমতায় শেষ হয় ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচন এলে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় বিএনপি : ভূমিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধইয়াবাসহ আটক মেম্বারকে ছিনিয়ে নিতে সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর