গেল বছর দেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ সেবাগ্রহীতা দুর্নীতির শিকার হয়েছেন বলে উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির জরিপে। গতকাল বুধবার টিআইবি কার্যালয়ে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি, জাতীয় খানা জরিপ ২০২১’ এর তথ্য তুলে ধরেন গবেষক ফারহানা রহমান। এই জরিপ বলছে, ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ ‘দুর্নীতির শিকার হয়েছেন’ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সেবা নিতে গিয়ে। অন্যদিকে ৭২ দশমিক ১ শতাংশ খানার উত্তরদাতা বলেছেন, সেবা পাওয়ার জন্য ঘুষ দিতে তারা বাধ্য হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
এছাড়া ৭০.৫ শতাংশ খানার উত্তরদাতা পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজে, ৬৮.৩ শতাংশ উত্তরদাতা বিআরটিএতে, ৫৬.৮ শতাংশ উত্তরদাতা বিচারিক সেবায়, ৪৮.৭ শতাংশ উত্তরদাতা স্বাস্থ্যে, ৪৬.৬ শতাংশ উত্তরদাতা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে, ৪৬.৩ শতাংশ উত্তরদাতা ভূমি সেবায়, ৩৩.৯ শতাংশ উত্তরদাতা শিক্ষায়, ৩৩.৫ শতাংশ উত্তরদাতা বিদ্যুত সেবায়, ২৭.৮ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তায়, ২৪.৫ শতাংশ কৃষিতে, ২২.২ শতাংশ বীমায়, ১৬.৩ শতাংশ এনজিওতে, ১৫.২ শতাংশ গ্যাসে, ১৫ শতাংশ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে, ১২.৪ শতাংশ কর ও শুল্কে এবং ১৭.৫ শতাংশ অন্যান্য ক্ষেত্রে সেবা নিতে গিয়ে ‘দুর্নীতির শিকার’ হওয়ার কথা বলেছেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১৬টি প্রধান সেবা খাতের সেবা প্রত্যাশী ১৫ হাজার ৪৫৪টি খানায় এই জরিপ চালানো হয়। জরিপের খানাগুলোর ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশই সেবা খাতের সেবা নিয়েছে।
টিআইবি বলছে, এই সময়ে দেশে ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেনের প্রাক্কলিত পরিমাণ ১০ হাজার ৮৩০ দশমিক ১ কোটি টাকা; যা ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ৫ দশমিক ৯ শতাংশ এবং জিডিপির শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বল হয়েছে, গত বছর ৪০ দশমিক ১ শতাংশ খানা ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেন করতে ‘বাধ্য হয়েছে’। ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ খানা দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং ২৩.৪ শতাংশ খানা অসদাচারণ ও হয়রানির শিকার হয়েছে। এছাড়া সেবা নিতে গিয়ে অনেকেই স্বজনপ্রীতি, প্রতারণা, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ ও আত্মসাতের শিকার হয়েছেন।