সেই প্রবাসীর জামিন

গুপ্তধনের লোভে সর্বস্বান্ত

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় মায়ের গুপ্তধন পাওয়ার লোভে এক ব্যক্তিকে দেওয়া ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলায় জেলে গিয়েছিলেন কাতার প্রবাসী মো. মামুন (২৫)। এ নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর দৈনিক আজাদীতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গতকাল আদালতের শুনানির দিন সংবাদটি আদালতের নজরে আসে। এর জেরে মামুনকে জামিনে মুক্তি দেন আদালত। মামুন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের গুদারপাড় বেতছড়ি গ্রামের দিনমজুর আবদুল মান্নানের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট নুরুল হক তালুকদার বলেন, আমরা নিরীহ প্রবাসী মামুনের জামিনের আবেদন করেছিলাম। সিনিয়র অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম কালামের নেতৃত্বে আজাদী পত্রিকার প্রতিবেদনসহ বিষয়টি ১৮ অক্টোবর নির্ধারিত শুনানির দিন আদালতের নজরে আনি। পরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছার আদালত (ফৌজদারী মিস মামলা নং-৩৫০১/২০২২) মামুনকে জামিনে মুক্তি দেন।

প্রসঙ্গত, বাঁশখালীর ছনুয়া গ্রামের সৈয়দ আহম্মদের ছেলে আহম্মদ কবির মানিক ওরফে স্বর্ণ মানিক মামুনের মা কুলছুমা বেগমকে গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ছেলে বিদেশ থেকে এসে বিষয়টি জানতে পেরে টাকা উদ্ধারে তৎপর হয়। এক পর্যায়ে স্বর্ণ মানিক গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে আদালতে যান। সেখানে স্বর্ণ মানিকের ভাই অপর প্রতারক কামাল উদ্দিনকে দেখতে পান তারা। তারা তাকে প্রথমে স্থানীয় পুলিশের কাছে, পরে ইসলামপুর ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে এসে তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে বলেন। কিন্তু প্রতারক চক্র মামুন ও প্রতারণার স্বীকার মীরসরাইয়ের বেলায়েতের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলা করে। এর ভিত্তিতে পুলিশ কামালকে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিয়ে যায় এবং মামুন ও বেলায়েতকে গ্রেপ্তার করে। টাকা হারানোর পাশাপাশি মামুন দুই মাস জেল খেটেছেন।

আজাদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মামুনের মা কুলছুমা বেগম বলেন, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে মিথ্যা মামলায় জেল খাটছিল। তার ওপর ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়ে ছেলের বিদেশ যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ছিল। আমার ছেলে জামিনে মুক্ত হয়েছে। আমার মতো এলাকার নিরীহ নারীদের সরলতার সুযোগে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। চক্রের সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আজাদীর প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মামুন জামিনে মুক্ত হয়েছে বলে শুনেছি। ভবিষ্যতে যাতে কোনো নিরীহ মানুষ এমন প্রতারণার শিকার না হয়, সেজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৭০০ কোটি টাকা লুটপাটে কী পদক্ষেপ, জানতে চায় হাই কোর্ট
পরবর্তী নিবন্ধস্টিল মিলকে লাখ টাকা জরিমানা