সূচক বাড়ল টানা ৯ দিন বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন

| শুক্রবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ঈদের ছুটি শেষে পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের যে ঝোঁক দেখা যাচ্ছে, তা বাড়ল আরও। ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে সূচক বাড়ল টানা নয় কর্মদিবস। আর লেনদেন টানা তিন কর্মদিবস বেড়ে চলতি ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছল।

গত ১২ এপ্রিলের পর থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৯ কর্মদিবসে সূচক বাড়ল ৭৭ পয়েন্ট। এই কয়দিনে লেনদেন ৪১১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার শেয়ার। খবর বিডিনিউজের।

চলতি বছর কেবল দুটি কর্মদিবস লেনদেন ছিল ৯০০ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ১৭ জানুয়ারি ৯০০ কোটি ৪৮ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং পরদিন ৯৩৪ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়। কিন্তু এরপর লেনদেন কমতে কমতে ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে। তবে এপ্রিলের শুরু থেকেই বাজারে ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। আর ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ধীরে ধীরে উত্থান।

গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই বাজারের প্রবণতা ছিল ইতিবাচক। এক পর্যায়ে বেলা ১১টার কিছু পর ১৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। এরপর দর বৃদ্ধির প্রবণতা কিছুটা কমে। আর শেষ দিকে বিক্রয় চাপ দেখা দেয়। তারপরেও শেষ পর্যন্ত ৭ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন। এদিন হাতবদল হয় ৯৬৭ কোটি ৬৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই লেনদেন গত ৯ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন হাতবদল হয়েছিল এক হাজার ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা।

তালিকাভুক্ত ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ও অন্যান্য কারণে পাঁচটি কোম্পানির লেনদেন ছিল বন্ধ। বাকিগুলোর মধ্যে ৭৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৬২টির দর। আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ২১০টি কোম্পানি। এগুলোর বেশিরভাগই ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে আর হাতবদল হয়েছে অল্প কিছু শেয়ার। অর্থাৎ এদিন মোট ৩৫১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হয়নি ৩৬টি কোম্পানি। চলতি বছর এক দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন এটি। আগের দিন ৩৪৮টি কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছিল।

বাজারে লেনদেন বাড়তে থাকলেও বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিংহভাগের শেয়ারেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ফেরেনি। ৩৫টি ব্যাংকের কোটি কোটি শেয়ার থাকলেও হাতবদল হয়েছে কেবল ১৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৩৩ লাখ, প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানি মিলিয়ে ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা, সাধারণ বিমার ৪০টি কোম্পানিতে ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, আর্থিক খাতের ২২টি কোম্পানিতে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ২৩টি কোম্পানিতে ২৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আর টেলিযোগাযোগ খাতের বড় মূলধনী দুটি কোম্পানি থাকলেও হাতবদল হয়েছে কেবল ছয় লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে ছিল জেনেঙ ইনফোসিস, ইউনিক হোটেল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন হাউজিং বসুন্ধরা পেপার, অলিম্পিক, জেমিসি সি ফুড, রূপালী লাইফ, এপেঙ ফুটওয়্যার ও আইসিটি। এই ১০টি কোম্পানিতেই লেনদেন হয়েছে ৩২৪ কোটি টাকার বেশি আর সেরা ২০ কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ৪৯২ কোটি টাকার বেশি।

দর পতনেও একই চিত্র। সবচেয়ে বেশি ৭.৩৭ শতাংশ দর হারানো মিডল্যান্ড ব্যাংক নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি। এর বাইরে আরামিট সিমেন্ট, জেমিনি সি ফুড, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, বিডি অটোকার, সমতা লেদার স্বল্প মূলধনী কোম্পানি। পতনের শীর্ষে দশে আরও দেখা গেছে ইউনিট হোটেল, সুহৃদ, আরডি ফুড ও সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহ আমানত মাজারের পুকুরে মিলল অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ
পরবর্তী নিবন্ধগর্জনিয়া বাজারে দিনদুপুরে শিক্ষককে কুপিয়ে জখম