সুরেশচন্দ্র সমাজপতি : লেখক সৃষ্টির কারিগর

| রবিবার , ১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ

লেখক, সাহিত্য সমালোচক ও সম্পাদক সুরেশচন্দ্র সমাজপতি। তাঁকে বলা হয় লেখক সৃষ্টির কারিগর। তাঁর জন্ম ১৮৭০ সালের ৩০ মার্চ কলকাতায়। পিতা গোপালচন্দ্র ঘোষাল সমাজপতি এবং মাতা হেমলতা। তারঁ মা হেমলতা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জ্যেষ্ঠা কন্যা। সুরেশচন্দ্রের পৈতৃক নিবাস নদীয়া জেলার আঁশমালি গ্রামে। অল্প বয়সে পিতৃবিয়োগ হলে তিনি ও তার ভাই যতীশ মাতামহের গৃহে প্রতিপালিত হন। শৈশবে মাতামহের কাছে গৃহে কাব্য, ছন্দ, অলঙ্কার ইত্যাদির সাথে বাংলা ও সংস্কৃতের শিক্ষা নেন। সুরেশচন্দ্র পনেরোষোল বছর বয়সেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। প্রধানত সাহিত্য সমালোচক ও সম্পাদকরূপে পরিচিতি লাভ করেন। ‘সাহিত্য কল্পদ্রুমমাসিক পত্রিকার সপ্তম সংখ্যা (মাঘ ১২৯৬ বঙ্গাব্দ) থেকে তিনি সম্পাদনা শুরু করেন।

এই পত্রিকা এপ্রিল, ১৮৯০ সাল হতে ‘সাহিত্য’ নামে প্রকাশিত হয় এবং এর সম্পাদক হিসাবে সাহিত্যজগতে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এই পত্রিকাকে আশ্রয় করে একটি শক্তিশালী লেখকগোষ্ঠী গড়ে ওঠে। তদানীন্তন লব্ধপ্রতিষ্ঠ প্রায় সকলের রচনাই পত্রিকায় স্থান পেত। সেজন্য সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সত্যিই সাহিত্যজগতের সমাজপতি ছিলেন। তার দ্বারা সমালোচনাসাহিত্য বহুল পরিমানে পুষ্ট হয়েছে। তিনি সাহিত্যিক সৃষ্টির কাজে যথেষ্ট প্রতিভার পরিচয় দিয়ে গেছেন। এই কারণে তিনি শুধু একজন সাহিত্যিক গণ্য না হয়ে যুগহিসাবে গণ্য হয়ে থাকেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যসেবী হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ তার কাছে সাংবাদিকতার পাঠ নেন এবং দীর্ঘদিন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক বসুমতীর সম্পাদক ছিলেন। সুরেশচন্দ্র সাহিত্যমাসিক পত্রিকা ছাড়াও আরো অনেক পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করেন। তাঁর সম্পাদিত পত্রিকাগুলো হচ্ছেবসুমতী, সন্ধ্যা, নায়ক, বাঙালি। সুরেশচন্দ্র দীর্ঘদিন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অন্যতম পরিচালক ছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় বাগ্মী হিসাবেও তার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। তিনি তার বাংলা ভাষণে কখনো ইংরাজী শব্দ ব্যবহার করতেন না। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যেকল্কিপুরাণ (১৮৮৬), সাজি (১৯০০), রণভেরী (১৯১৫), ইউরোপের মহাসমর (১৯১৫), ছিন্নহস্ত (১৯১৫) উল্ল্যেখ যোগ্য। সুরেশচন্দ্র সমাজপতি ১৯২১ সালের ১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বাগতবাণী
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে