চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোর মধ্যে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এরমধ্যে তীব্র সংকট চবির আলাওল হল ও শেখ হাসিনা হলে। সমপ্রতি শেখ হাসিনা হলে দিনে দুই লিটারের বেশি পানি না নিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, আলাওল হলে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৩টি পানির ফিল্টার। ১১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪টি টয়লেট। ডাইনিং বেসিনের যাচ্ছেতাই অবস্থা থেকে শুরু করে হলে চেয়ার–টেবিল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত চবির সর্বপ্রথম আবাসিক হল আলাওল হল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন প্রভোস্ট না থাকায় নিয়মিত কাজ করেন না কর্মচারীরা, অপরিষ্কার থাকে টয়লেট–বাথরুম, ডাইনিংয়ের মানহীন খাবার এবং দুর্গন্ধসহ নানান সমস্যায় রয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, হলে মাত্র ৩টি ফিল্টারের মধ্যে ২টি নষ্ট থাকায় পানি আসে না। এ ছাড়া হলের পশ্চিম ব্লকের প্রথম তলায় একটি টয়লেট ব্লক এবং দ্বিতীয় তলায় আরও একটি টয়লেটের দরজা ভাঙা থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ছাত্ররা। এ দুই তলায় প্রায় ১১০ জনের জন্য সচল টয়লেট রয়েছে মাত্র ৪টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রায় ১ বছর ধরে হল কর্তৃপক্ষকে বলে আসছি টয়লেট দুইটা সচল করে দিতে। কিন্তু ওনারা এগুলো সচল করেননি।
এ ছাড়া ডাইনিংয়ের বেসিন দীর্ঘদিন পরিস্কার না করাই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দিনের পর দিন এমন অপরিষ্কার থাকায় সেখানে যাওয়া দুঃসহ হয়ে উঠছে বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি হলে খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং দৈনিক পত্রিকারও তীব্র সংকট রয়েছে বলে জানান তারা। হলের ডাইনিংয়ে জনবল কম থাকায় খাবার রান্না ও পরিবেশন করার ক্ষেত্রেও বেগ পেতে হচ্ছে বাবুর্চিদের। সংকট নিরসনে গত ১৩ মে দুপুরের রান্না বন্ধ রেখে হলের সামনে অবস্থান নেন তারা।
হলের সমস্যা নিয়ে এক আবাসিক ছাত্র বলেন, আমরা যখনই কোনো সমস্যা নিয়ে হলের অফিসে যাই, তখন অফিস থেকে বলা হয় হলে প্রভোস্ট স্যার নেই। আমরা কিছু করতে পারবো না। আমাদের হাতে সবকিছু থাকে না।
এ বিষয়ে হলের ঊর্ধ্বন কর্মকর্তা সৈয়দ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করি সবসময় শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করতে কিন্তু হলের ধারণ ক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী উঠায় সুপেয় পানি এবং টয়লেটে সংকুলান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক সদরুল আলম কনক বলেন, হলে পানির ফিল্টার সমস্যা ছিলো ওটা আমরা ঠিক করেছি। আর নিচতলার ওয়াশরুমগুলো সংস্কার কাজের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো। শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারতো না। আমরা কয়েকবার কন্ট্রাকটারদের নিকট চিঠি দিয়ে এগুলো ব্যবহার উপযোগী করেছি। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের খেলার সামগ্রী সংকট ছিলো, আমরা সেগুলো আংশিক সমাধান করেছি। তাছাড়া হলে প্রভোস্ট না থাকায় সমস্যাগুলো স্থায়ীভাবে সমাধান করা যাচ্ছে না। আমরা উপাচার্য স্যারকে জানিয়েছি হলে প্রভোস্ট না থাকায় বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। স্যার অতি সত্বর নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, আলাওল হলের সমস্যাগুলো মাথায় রেখেই দ্রুত প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু অনেকে দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন না। তবে আজকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওনি দ্রুতই হলে যোগদান করবেন।