সুপারশপ-মুদি দোকানে ভিড়

সরবরাহ পর্যাপ্ত, মূল্য স্থিতিশীল

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৬ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সুপারশপ-মুদি দোকানে বেড়ে গেছে ক্রেতাদের অস্বাভাবিক ভিড়। গতকাল ছিল লকডাউনের প্রথম দিন। এদিনও ক্রেতাদের বিভিন্ন সুপারশপ এবং মুদি দোকানে গিয়ে নিত্যপণ্য কিনতে দেখা যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে এমন গুজবে অনেকে এককালীন জিনিসপত্র কিনে রাখছেন। অনেকে রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য এখন থেকেই কেনা শুরু করে দিয়েছেন। তবে বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকার ফলে কোনো পণ্যেরই দাম বাড়েনি।
গতকাল নগরীর কাজীর দেউরি এবং ২নং এলাকার কর্ণফুলী মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পণ্যের বিক্রি বাড়লেও দাম বাড়েনি। গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে নিত্যপণ্যের বাজার। বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫ টাকায়। এছাড়া রসূন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এতদিন বাজারে চীনা আদা ছিল না। তবে মাস খানেক আগেও এই আদা বিক্রি হয়েছে কেজি ১১০ টাকায়। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে এক লিটার ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, ২ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ থেকে ২৭০ টাকা, ৩ লিটার ৪০৫-৪১০ টাকা এবং ৫ লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ৬২৫ থেকে ৬৫০ টাকায়। এছাড়া শুকনো মরিচ ২৮০ টাকা এবং হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
অন্যদিকে রমজানের অত্যাবশকীয় পণ্য ছোলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬৫ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া মসূর ডাল ১২০ টাকা এবং মটর ডাল ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে খুচরা পর্যায়ে চালের বাজারও গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ প্রতি কেজি ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৬৩ টাকা, পাইজাম আতপ ৬৫ টাকা এবং বেতী আতপ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া কাটারি আতপ ৭৫ টাকা এবং স্বর্ণা সিদ্ধ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়।
জানতে চাইলে কাজীর দেউরি এলাকার হক ভান্ডার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে দোকানে বেচাবিক্রি বেড়েছে। তবে গত বছর লকডাউনের আগে ও পরে বাজার চাঙা থাকলেও এবছর সেটি নেই। এখনো আগের দামেই হচ্ছে বেচাবিক্রি। শুনেছি এ বছর পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি হয়েছে।
এদিকে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জেও কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। উল্টো বেশ কিছু পন্যের দাম নিম্নমুখী। জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, রমজানকে কেন্দ্র করে এবার পর্যাপ্ত পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হয়েছে। যার কারণে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছি না।
এম এম ইলিয়াছ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা জানান, দাম বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা থেকে অনেকে এক সাথে বেশি পণ্য কিনেছেন। এটি একদমই উচিত না। এতে পণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউনকালে আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত নিত্যপণ্য ক্রয় ও মজুদ না করার আহ্বান জানিয়েছেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নেতারা। তারা বলেন, গতবছর অনেক ভোক্তা লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার পর একসঙ্গে অনেক নিত্যপণ্য এমনকি চাল, ডাল, আলু, ভোজ্যতেল, সাবান, হ্যান্ডস্যানিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল, ওষুধ, অঙিজেন সিলিন্ডার মজুদ করে নিজের বাসগৃহকে গুদামে পরিণত করেন। কিন্তু ২ মাস যেতে না যেতেই পণ্যগুলি মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা নষ্ট হতে শুরু করে। আবার একসঙ্গে এভাবে হুমড়ি খেয়ে পণ্য কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা দাম ২-৩ গুণ বাড়িয়ে দেন। ফলে ক্রেতারা বেশি দামে কিনতে বাধ্য হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামুনুল হকসহ ১৭ হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধএবার চালু হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট