সীতাকুণ্ডে ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি

ডায়রিয়ারও প্রকোপ

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | শনিবার , ১৬ জুলাই, ২০২২ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডের প্রায় প্রতি ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তবে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষা নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই মানুষের। গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম এবং কোরবানে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণেই ডায়রিয়া রোগী বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। তবে করোনা মহামারিতে এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর ও ডায়রিয়া দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, এবারের জ্বরে অন্যান্য বারের তুলনায় ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিয়েছে। অন্যান্য সময়ে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি ছিল। এবার ওইসব লক্ষণের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তিরা শরীরে ব্যথা অনুভব করছেন। একবার শুরু হলে জ্বর থাকছে দীর্ঘ সময়। এসব রোগে সমানে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। আক্রান্তদের সিংহভাগ গ্রামের পল্লী চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। এভাবে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে করোনা টেস্ট করার ব্যাপারে আগ্রহ খুব কম মানুষেরই লক্ষ্য করা গেছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, নাকের ঘ্রাণ নষ্ট, স্বাদ না পেলে কিংবা ডায়রিয়া হলে প্রাথমিকভাবে তাদের করোনা সংক্রমিত বলে ধরে নিতে হবে। ফলে দেরি না করে প্রথমদিনেই তাদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে। যদি অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ আসে তবে আরটিপিআর ল্যাবে পরীক্ষা করাতে হয়। এ লক্ষণের বাইরে রোগীদের তৃতীয় দিন থেকে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। অন্যদিকে শরীরে ব্যথা থাকলে ডেঙ্গু হতে পারে। এছাড়া মৌসুমি জ্বর, হেপাটাইটিস-ই বা টাইফয়েড হওয়ারও আশক্সক্ষা রয়েছে এসময়। তবে যে কারণেই জ্বরই হোক, শুরুতে রোগীকে আইসোলেশনে চলে যেতে হবে। এতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সুরক্ষিত থাকবে।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের কাছে আসা বেশিরভাগ রোগী জ্বর নিয়ে আসছে। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও জ্বরের রোগী বেড়েছে। জ্বর, কাঁশি ও গলা ব্যথায় দুদিনের বেশি সময় ধরে যারা আক্রান্ত রয়েছেন তাদের দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফ্লু-কর্নারে গিয়ে স্যাম্পল দিতে পরামর্শ দেন তারা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রফিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজের করোনা ইউনিটের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ বলেন, করোনা রোগী বাড়ছে। এখন জ্বর হলেই আইসোলেশনে চলে যেতে হবে। রোগীকে অবশ্যই অক্সিজেনের মাত্রা দেখতে হবে। অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকলে অপেক্ষা না করে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু তাদের কাছে রোগী তখনই আসে যখন রোগী সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। এতে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুকুরে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধ‘দ্বিতীয় সুন্দরবন’ বাঁচবে?