সীতাকুণ্ডের ঘটনায় সরকার পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট দিচ্ছে

চমেক হাসপাতালে আমীর খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৮ জুন, ২০২২ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকার ‘পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট’ দিলেও কোনো লাভ হবে না বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি আর কত নিচে নামবে? তারা রাজনীতি আর কত নিচে নামাবে? বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা! দেশে যে কোনো ঘটনা ঘটলেই তারা নাশকতা দেখে। যদি নাশকতা হয়েই থাকে, তাহলে দায়িত্বটা তাদের। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে নাশকতা কে করেছে তাদের খুঁজে বের করা। এখানে পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট দিয়ে তো কোনো লাভ নাই।

তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আসল কথা হচ্ছে কন্টেনার ডিপোটি নিয়মের মধ্যে পরিচালনা হয়েছে কিনা? কার ব্যর্থতা রয়েছে? এটা কি মালিকের ব্যর্থতায় হয়েছে, না অন্য কারো ব্যর্থতায় হয়েছে। সরকার এই কথাগুলো না বলে নাশকতার কথা বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে। খসরু বলেন, দেশে আইন-কানুন যেগুলো আছে কিছুই প্রয়োগ হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে আইনও নাই। আইন প্রয়োগ না হওয়ার কারণ হচ্ছে, অব্যবস্থাপনা, অযোগ্য ও অনির্বাচিত দুর্নীতিবাজ সরকার দেশ পরিচালনা করছে। সেটার প্রতিফলন ঘটছে সবখানে। সুতরাং তারা তো নাশকতা দেখবে। সবখানে যখন তারা ব্যর্থ হচ্ছে তখন নাশকতা ছাড়া আর কিছু দেখার সুযোগ নাই। ব্যর্থতা ঢাকতে তারা নাশকতা দেখবে, এতে করেই সব দায়ভার বিএনপির উপর চাপাতে পারবে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, মামলার করার আগে সরকার দেখবে দলীয়, আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত আছে কীনা। আগে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখবে? তারপর আওয়ামী লীগ মামলা মোকদ্দমা সেইভাবে করবে। তিনি বলেন, এটা শুধু এখানকার দৃশ্য নয়, সারাদেশেই এভাবেই সব হচ্ছে। আওয়ামী লীগ করলেই পার পাওয়া যায়। দেশে কারা আওয়ামী লীগ করে, কারা আওয়ামী লীগ করে না এর ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করছে। আমাদের কাছে তা বিবেচ্য হতে পারে না।

আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে আজকের অবস্থান কী? চরম অব্যবস্থাপনা, চরম দুর্নীতি বিরাজ করছে। একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তার প্রতিফলন ঘটছে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে টাকা দুর্নীতি করে বিদেশে পাচার করছে। অথচ ফায়ার সার্ভিসের পর্যাপ্ত ইক্যুপমেন্ট ও লোকসংখ্যা নাই। খসরু বলেন, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, ড্যাব, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, আমাদের সমস্ত সংগঠন মিলে ঘটনার দিন থেকে কাজ করে যাচ্ছে ও সহযোগিতা করেছে। ব্লাড ব্যাংক করা হয়েছে, যাদের দরকার তাদের অনুরোধ করবো এই ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নিতে পারবেন। এরপরও আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা বিরোধী দল হিসেবে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কারণ এটা মানবিক বিষয়। রাজনীতির বিষয় না।

তিনি বলেন, সরকার দুই লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এই দুই লাখ টাকা দিয়ে কি প্রাণ ফিরে পাওয়া যাবে? নাকি ৫০ হাজার টাকায় আহত কারো চিকিৎসা করা যাবে। যেহেতু তাদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নাই সেজন্য তারা দুই লাখ টাকা ও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পার পেতে চাচ্ছে। সাধারণ মানুষও তো তার চেয়ে বেশি দিচ্ছে।

আমীর খসরু চমেক হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং আহত ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন। এরপর তিনি সীতাকুণ্ডে কনটেনার ডিপোর দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিখোঁজ বিএম কন্টেনার ডিপোর ড্রাইভার মনিরুল ইসলামের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সমবেদনা জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, বিএমএ চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. খুরশিদ জামিল, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দীন, জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, ড্যাব কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম, চমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়েজুর রহমান, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ড্যাব নেতা ডা. ঈসা চৌধুরী, ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. শাকিল উল রশিদ, ডা. মঈন উদ্দীন, ডা. মেহেদী হাসান, নগর বিএনপির সদস্য আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য কাজী মো. সালাউদ্দীন, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, নগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকারো ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে সাংবাদিক ফজলে এলাহী গ্রেপ্তার