একাত্তরে চট্টগ্রামের দামপাড়ায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে এসপি শামসুল হকসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের গল্পে নির্মিতব্য ‘দামপাড়া’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ; তার স্ত্রীর চরিত্রে কাজ করবেন অভিনেত্রী আশনা হাবীব ভাবনা। নাট্যকার ও গবেষক আনন জামানের গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন শুদ্ধমান চৈতন। খবর বিডিনিউজের।
আনন জামান বলেন, যখনই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা হয়, তখন বেসামরিক যোদ্ধাদের লড়াই ও আত্মত্যাগের কথা উঠে আসে। যারা প্রশাসনে থেকে যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন তাদের কথাগুলো আমরা কম জানতে পারছি। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের গল্পে সিনেমাটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
গবেষক জামাল উদ্দিনের ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম শহর’ বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মার্চে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার শামসুল হক, কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল খালেক ও দামপাড়া পুলিশ লাইনের আরআই আকরাম হোসেনের সম্মিলিত পরিকল্পনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন পুলিশের সদস্যরা। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর ২৮ মার্চ ভোরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দামপাড়া পুলিশ লাইন আক্রমণ করে। এরপর ১২ এপ্রিল আরআই আকরাম হোসেনকে চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লা থেকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৬ এপ্রিল ওসি আব্দুল খালেককে ও ১৭ এপ্রিল এসপি শামসুল হককে ক্যান্টনমেন্টে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জনকেই নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা।
এসপি শামসুল হকের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মাহমুদা হক আর কখনো পায়ে জুতা পরেননি; মাহমুদা হকের চরিত্রে দেখা যাবে ভাবনাকে। মুক্তিযুদ্ধের এ প্রতিরোধ সংগ্রাম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এই পুলিশ কর্মকর্তাদের আত্মত্যাগের গল্প নিয়েই এ চলচ্চিত্র। এতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ত্যাগের কথাও থাকবে। ফেরদৌস ও ভাবনা ছাড়াও এতে অভিনয় করবেন ঝুনা চৌধুরী, অনন্ত হীরা, মাজনুন মিজান, মুনতাহা।
আনন জামান জানান, সিনেমার দৃশ্যধারণ শুরুর আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে বাকি শিল্পীদেরও শুটিংয়ের বিস্তারিত জানানো হবে। সিনেমাটি প্রযোজনা করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।