সিআরবি ও একজন মুক্তিযোদ্ধার আত্মদহন

মোহাম্মদ ইউনুছ | রবিবার , ৭ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:১৭ পূর্বাহ্ণ

সিআরবি নামে দীর্ঘকাল থেকে পরিচিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানটি চট্টগ্রাম নগরীর ফুসফুস হিসেবে খ্যাত। এই সিআরবি হচ্ছে সেন্ট্রাল রেলওয়ে হেড কোয়ার্টার বিল্ডিংয়ের সংক্ষেপিত নাম। ১৮৮৬ সাল থেকে কয়েক বছর চট্টগ্রামের কমিশনার ও একই সঙ্গে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটও ছিলেন ডি. আর. লায়ন। এই সময়ে কবি নবীন চন্দ্র সেন চট্টগ্রামের কমিশনারের পার্সোনেল এ্যাসিসটেন্ট নিযুক্ত হন। লায়ন সাহেবের কার্যপ্রণালীর সাথে নবীন চন্দ্র সেন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তাঁর সময়ে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের জন্য মাটির রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হয়। চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপনের ব্যবস্থা নবীন চন্দ্র সেন কর্তৃক সুপারিশকৃত হওয়ায় লায়ন সাহেব তাঁর প্রতি খুবই সন্তুষ্ট ছিলেন। লায়ন সাহেবের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের হেড কোয়ার্টার স্থাপনের উদ্যোগ শুরু হয়। ১৮৯২ সালে বর্তমান স্থানে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে বিল্ডিংয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় এবং ১৮৯৫ সালে সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) নির্মাণ সম্পন্ন হয়। প্রায় একই সাথে এই ভবন সংলগ্ন স্থানে রেলওয়ে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হাসপাতালের পেছনে ছিলো বর্ণবাদী ব্রিটিশ শাসকদের বর্ণবাদী পুরনো ইউরোপীয়ান ক্লাব। যার প্রবেশ দুয়ারে লেখা ছিল ‘ভারতীয়দের আর কুকুরের প্রবেশ নিষিদ্ধ’। পরবর্তীতে এই পুরনো ইউরোপিয়ান ক্লাব রেলওয়ে হাসপাতালের সাথে অন্তর্ভূক্ত হয় এবং নতুন ইউরোপিয়ান ক্লাব পাহড়তলীতে স্থানান্তরিত হয়। এই নতুন ইউরোপিয়ান ক্লাবে এক সফল অভিযানে প্রীতিলতা আহত অবস্থায় গ্রেফতার এড়াতে আত্মহনন করেন। তাই এই স্থানটি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের একটুকরো হীরকখণ্ড। উল্লেখ্য যে, সিআরবি-এর এ স্থানটি একাত্তরের মহান মুক্তিদ্ধের বহু স্মৃতি বিজড়িত এলাকা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নয়জন শহীদের কবরস্থানও এই সিআরবি-তে প্রায় অরক্ষিত রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এর প্রথম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রব, শেখ নজির, মনোয়ার হোসেন, হাসিবসহ অনেকে। অপার প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যে ভরপুর ও অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী সিআরবি সংলগ্ন রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনীতে বসবাসসূত্রে আমি ও আমার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের শৈশব ও কিশোরকাল অতিবাহিত হয়েছে সিআরবি এলাকায়। এই রেলওয়ে কলোনীতেই আমার বেড়ে ওঠা। আমার বাবা রেলওয়ের কর্মকর্তা হওয়ার সূত্রে আমি ও আমার মতো অনেক পরিবারই ছিলেন এই কলোনীর স্থায়ী বাসিন্দা।
শৈশবেই সিআরবি-কে ঘিরে এক ধরনের মুগ্ধতায় হৃদয়-মন জুড়িয়ে যেত। ঐতিহাসিক সাত রাস্তা মোড়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকা ওয়াহিদ মুরাদ ও জেবা জুটির শুটিং এখনও চোখে ভাসে। আর রেলওয়ে হাসপাতালটি ছিলো আমার মতো অনেক শিশু-কিশোরের প্রাণের আকর্ষণ। কী পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি এই হাসপাতাল চত্বরটি। পরিবেশটি ছিল পাশ্চাত্যের মতো গোছানো। বেডগুলো ছিলো ধবধবে সাদা, কেবিনগুলোও ছিলো মনোরম। কার না ইচ্ছে করে ঐ হাসপাতালে যদি থাকতে পারতাম। এই হাসপাতালের ডাক্তার খালেক চাচা, মহিউদ্দিন চাচা, দাশ কাকা ও দত্ত কাকার মিঙার ও ঔষধ না খেলে কোন রোগ-বালাই ভালোই হতো না।
ছোটবেলায় মিউনিসিপ্যাল স্কুলে পড়তাম। এখানকার প্রায় সকল ছাত্র দুরন্তপনায় শ্রেষ্ঠ। আমি শ্রেষ্ঠদের মাঝে অন্যতম। এই রেলওয়ে কলোনীগুলোতে অবাঙালি বিহারীদের ছিল দোর্দণ্ড প্রতাপ। তাদের সাথেও দুরন্তপনায় জড়িয়ে পড়তাম। ওরা আমাদের বাঙালি কাউয়া বলে গাল-মন্দ করতো এবং আমাদের সাথে খুব-একটা মিশতো না।
১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা রিপোর্ট বাতিল আন্দোলন চট্টগ্রামে বেশ তুঙ্গে। আবদুর রব ভাই, হারুন ভাইয়ের বাসা এই রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনীতে। তাঁরা ছিলেন বড় ছাত্রনেতা। এদের সাথে মিছিল করে কোর্ট বিল্ডিংয়ে গেছি কিশোর বয়সে শ্লোগান দিতে দিতে। নেতারা কলো পতাকা উঠাতেন কোর্ট বিল্ডিং শীর্ষে এবং অনলবর্ষী বক্তার মত বক্তৃতা দিতেন। তখন শরীরে অদ্ভুত এক শিহরণ দোলা দিতো। আবদুর রব ভাইয়ের বাড়ি ফরিদপুরে, বর্তমানের গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়ায়। হারুন ভাই ও নজির ভাইয়ের পৈত্রিক বাড়িও ফরিদপুরে, বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কাছেই। তাই তাঁদের প্রতি আমার বাড়তি টান ছিলো। রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনীতে বসবাসকারী বাঙালিদের মধ্যে প্রায় শতভাগই ছিলো ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগার। এই কলোনীতে রবিউল হোসেন কচি ভাই ও মনোয়ার ভাইসহ অনেক সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতারা থাকতেন। ১৯৬৬ থেকে শুরু করে ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০ সালের অগ্নিঝরা সংগ্রামী দিনগুলোতে বিপ্লবী ছাত্র নেতা মৌলভী ছৈয়দ আহমদ, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, এস.এম. ইউসুফ, মোখতার আহমদ, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ভাইসহ অনেকেই রব ভাইয়ের সাথে দেখা করতে এই কলোনীতেই আসতেন। এঁদের প্রত্যেকের সাথে আমার সম্পর্কটা একটু বেশি ছিলো।
পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাদের খেয়াল খুশি মত শিক্ষা কার্যক্রমে যেসব চাপিয়ে দেবার প্রয়াস চালায়; তার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ বরাবরই ছিলো সোচ্চার। উল্লেখ্য যে, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের শুরুতেই ‘পাকিস্তান; দেশ ও কৃষ্টি’ বিরোধী আন্দোলনে তুঙ্গে পৌঁছে। আমি এই আন্দোলনের সম্মুখ কাতারের মাধ্যমিক স্কুল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি হিসেবে ১৯৭০ সালে যখন কারাগারে ঢুকি, তখন রব ভাই প্রায় বাসায় এসে আমার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিতেন।
১৯৭১ সালে অগ্নিগর্ভ অসহযোগ আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে ২ মার্চ মধ্যাহ্নে লালদিঘির ময়দানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের বিশাল প্রতিবাদী সমাবেশে যখন পাকিস্তানী পতাকায় আগুন দিই তখন শিরায় শিরায় প্রবাহিত হলো তাপিত রক্ত তরঙ্গ। কী দুঃসাহসিক এই দ্রোহ যা এখন হৃদয়ে অনুরণিত হয়। ঐ রাতেই বাসায় ফিরে দেখি রব ভাই বাসায় বসে আছেন এবং আমাকে দেখেই বললেন, ‘এখনই বাসা থেকে সরে যেতে হবে, পুলিশ গ্রেফতার করতে আসবে।’ আমি ৭১’র ৩ ফেব্রুয়ারি সাজা ভোগ করে জেল থেকে বের হয়েছি। তাই ভাবছি, এখন যাব কোথায়? তবে কথাটা ভাবলাম শুধু, রব ভাইকে মুখে বললাম না।
বোয়ালখালী কড়লডেঙ্গা থেকে ২৬ মার্চ রাতে যখন শহরে ফিরে এলাম তখন মাথার উপর দিয়ে পাকিস্তানি ফ্রিগ্রেড বাবর জাহাজ থেকে অনবরত সেলিং চলছিলো। আকাশ লালে লাল। রাতে ভাত খেতাম না, রুটি খেয়ে মিশকা হোটেলের দোতলায় ঘুমালাম। পরদিন ২৭ মার্চ সকাল ৬টায় মহিউদ্দিন ভাই জানালেন, ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড কমান্ড জিয়াউর রহমান সাধারণ সৈনিকদের ফেলে কালুরঘাট চলে গেছেন। ওখানে এখনই যেতে হবে।
ল্যান্ডক্রুজার জিপে করে আমরা রওনা দিলাম। গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা। অমল মিত্র গাড়িতে উঠতে চাইলে মহিউদ্দিন ভাই নামিয়ে দিলেন। তাকে রেস্ট হাউসে থাকতে বললেন। গাড়িতে মহিউদ্দিন ভাইয়ের হাতে একটি রাইফেল, আমার হাতে একটি, মোছলেম ভাইয়ের হাতে কিছু জরুরি কাগজ-পত্র ও জয় বাংলা বাহিনীর একটি সিল আর নায়েক সুবেদার ছিদ্দিকুর রহমানের হাতে ১টি গ্রেনেড ছিল। আমরা জুবিলী রোড হয়ে ষোলশহরে যাবার পথে নেভাল এভিনিউ আসতেই দেখলাম পাকিস্তানি নৌ কমান্ডো অবস্থান নিয়েছে। ওখানে ওয়াসার একটা পাম্প হাউস ও বেশ বড় একটা বটগাছ ছিলো। মনের সাহস নিয়ে আক্রমণ করলাম, কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র। মেশিনগানের গুলির ঝাঁকে দুটি রাইফেল নিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারলাম না। আমজনতারা পাথর ছুঁড়ে আমাদের সাহায্য করছিলো তাদের অনেকেই শহীদ হলো। লাশের স্তুপ থেকে আমরা ৪ জন রাইফেলসহ গ্রেফতার হলাম। অগণিত শহীদদের পরিচয় আর জানা হলো না। এরপর শুরু হলো যুদ্ধবন্দী অসহনীয় জীবন। অকথ্য নির্যাতনে অতিবাহিত হচ্ছিলো প্রতিটি ক্ষণ ও মুহূর্তে।
আজ জানতে ইচ্ছে করে সেদিন যদি মহিউদ্দিন ভাই সহ আমরা শহীদ হতাম, আমাদের রক্ত সেদিনের অন্য শহীদদের রক্তের মতো নালা দিয়ে প্রবাহিত হতো। সেদিন কী আমাদের লাশ গণকবরে শায়িত করার জন্য কেউ নেভাল এভিনিউতে আসতে সাহস করতো? আমাদের লাশের মাংস কি শেয়াল-কুকুরের খাদ্যে পরিণত হতো? যেমনটি শহীদ হাসিবের লাশের ক্ষেত্রে হয়েছিলো। তাঁর মরদেহের মাংস শেয়াল কুকুর খেয়ে হাড়গুলো রেখে গিয়েছিলো, কোন এক সহৃদয় দেশপ্রেমিক বাঙালি শহীদ হাসিবের হাড়গুলো সিআরবি শিরীষতলায় মাটি চাপা দিয়েছিলেন বলে তাঁর সমাধি চিহ্নটি আমরা খুঁজে পাই।
আমরা ৪ জন বন্দী পাকিস্তানি নৌ-ঘাঁটি বখতেয়ারে ২টি সেলে। একটি সেলে মহিউদ্দিন ভাই ও আমি এবং আরেকটিতে মোছলেম ভাই ও নায়েক সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান। একদিন রাতে একটি সেল থেকে মহিউদ্দিন ভাই ও অন্য সেল থেকে সিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে হাওয়া। কিছুক্ষণ পর দুটি গুলির শব্দ কানে এলো। পরদিন সেলে আমাদের দু’জনকে আলাদা ল্যাফেটেনেন্ট ভাট্টির সামনে দেয়া হলো। ভাট্টি জানালো মহিউদ্দিন ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদেরকেও আজ রাতে হত্যা করা হবে। যাই হোক আল্লাহর অশেষ রহমতে মহিউদ্দিন ভাই সহ আমরা সেই দুর্বিনীত দুঃসময়ে প্রাণে বেঁচে যাই। নানা ছলচাতুরী ও কৌশল করে জেল থেকে বেরিয়ে আসি। তবে নায়েক সুবেদার ছিদ্দিকুর রহমানের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা আজ পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
এই লেখাটি লিখেছি ইতিহাসের মানসপটে সেই দুঃসহ দিন-রাত্রির স্মৃতির নিভু নিভু দীপশিখা জ্বালিয়ে দিতে। সেদিন যদি সত্যিই শহীদ হতাম, আমরা কি খবর পেতাম? আমাদের লাশ কি শেয়াল-কুকুরের খাদ্য হতো? যদি কবরই পেতাম না! তাহলে কি তার চিহ্ন থাকতো? আজ যে সিআরবি-তে শহীদ আবদুর রব, শহীদ মনোয়ার, শহীদ শেখ নজির, শহীদ হাসিবসহ নয়জন শহীদদের সমাধির পবিত্র চিহ্ন ধ্বংস করে বিত্তবানদের জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেই শহীদদের পবিত্র সমাধি চিহ্নে হয়তো আমারাও শায়িত থাকতে পারতাম! হয়তো ভাগ্যের জোরে বেঁচে আছি।
স্বাধীনতার পর শহীদ রব ভাইয়ের লাশ তাঁর মায়ের আহাজারিতে পাহাড়তলী ইঞ্জিনিয়ার কলেজ ক্যাম্পাস থেকে রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনী এনে সিআরবিতে পুনঃদাফনকালে রবিউল হোসেন কচির সাথে আমিও ছিলাম। যেহেতু আমিও রেলওয়ে কলোনীর বাসিন্দা ছিলাম। যদি লাশ আর কবর স্থানান্তরিত করা না যায় তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা পাকিস্তানের মাটি থেকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের লাশ কীভাবে আনলেন? একইভাবে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের লাশ ভারত থেকে দেশে এনে কীভাবে পুনঃ কবর দেয়া হলো। শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরীর কবর দামপাড়ায় কি নেই? তাহলে তো সেনাবাহিনী ঐ স্থানটি তাদের করে নিতেই পারতো। শহীদ সাইফুদ্দিনের কবর আছে বলেই তারা তা দখল করেননি।
আজ জাতির কাছে, তাদের বিবেকের কাছে সবার মতো আমিও চাইবো শহীদ আবদুর রব, শহীদ শেখ নজির আহমদ, শহীদ মনোয়ার ও শহীদ হাসিবের কবর চিহ্নগুলো প্রাইভেট হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতালওয়ালাদের শকুনি ছোবল থেকে রক্ষা করা হোক। স্বাধীনতার ইতিহাস না থাকলে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস থাকবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মৃতিচিহ্ন না থাকলে ইতিহাসও মুছে যাবে এবং তখন ভিলেন হবে মহানায়ক এবং প্রকৃত মহানায়ক হবেন ভিলেন।
চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও প্রধান বন্দরনগরী। ৬০ লাখ জন অধ্যুষিত নগরীতে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাখাত অত্যন্ত অপ্রতুল। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি জনগণের প্রধান মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম। বঙ্গবন্ধু এই খাতটিকে গুরুত্ব দিয়ে গরীবের চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণে উদ্যোগী ছিলেন। এই বিষয়টি আজ যারা চট্টগ্রাম থেকে সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও নীতি-নির্ধারকদের অজানা থাকার কথা নয়। কিন্তু তাঁরা কেউতো একবারও বলছেন না চট্টগ্রামে সর্বসাধারণের সুলভে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বড় পরিসরে বড় আকারে একটি অত্যাধুনিক পাবলিক হাসপাতাল চাই। এই জন্য জায়গারও অভাব নেই। অথচ তাদেরই কেউ কেউ সিআরবিতে গুটিকয়েক ধনী ও বিত্তবানদের জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল স্থাপনে ওকালতি করছেন। আসলে এসব যারা করছেন তারা উপরে মুজিব কোটধারী কিন্তু ভিতরে কী তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
লেখক : একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ও পঁচাত্তরের সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধা

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে
পরবর্তী নিবন্ধকলকাতায় পরীমনির ব্যস্ত সময়