অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সাথে তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে প্রদীপের পক্ষে জামিন আবেদন ও রাষ্ট্রপক্ষে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আবেদন করা হয়। আদালতের পেশকার মো. মনির আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আগামী ৭ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী শুনানি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলার ধার্য তারিখ ছিল। সে অনুযায়ী কঙবাজার থেকে চট্টগ্রাম কারাগার হয়ে প্রদীপকে চট্টগ্রাম আদালতে নিয়ে আসা হয়। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর দুদকের উক্ত মামলায় প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুদকের দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত। একই সাথে পলাতক থাকা প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও তার মালামাল ক্রোকের আদেশ হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের এ মামলায় গত ২৮ জুলাই প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে একই আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন চার্জশিট দাখিল করেন। যেখানে ২৯ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। চার্জশিটে বলা হয়, প্রদীপ ও চুমকি মোট ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার ‘জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ’ অর্জন করেছেন।
গত বছরের ২৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজউদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারা, ২৭ (১) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ (২) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কঙবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। পরের মাসের ৬ আগস্ট কঙবাজার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন প্রদীপসহ ৭ জন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল এবং চলতি মাসের ২৭ জুন প্রদীপসহ চার্জশিটভুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।