সাদ মুসা গ্রুপের এমডি ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ব্যাংকের ৮৩ কোটি ২০ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা ব্যাংকের ৮৩ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের মামলায় বায়েজিদের ব্যবসায়ী সাদ মুসা গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ মহসিন ও তার স্ত্রী শামিমা নারগিস চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বাদী পক্ষের দরখাস্ত ও বিবাদী পক্ষের লিখিত আপত্তি শুনানি শেষে বিচারক এ আদেশ দিয়েছেন।

আদালতসূত্র জানায়, বাদী পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে উল্লেখ করেন, ৮৩ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫৫ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে ঢাকা ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখায় এই মামলা দায়ের করে। বিবাদী মোহাম্মদ মহসিন একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি। সুদ মওকুফ সুবিধাসহ নালিশি ঋণ দুই বার পুনঃতফশিল হওয়ার পরও বিবাদীরা ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে এগিয়ে আসছে না। বাদী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই আদালতে অন্তত ১০ টি মামলা চলমান আছে। মামলাগুলোতে বিবাদীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দাবিকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকার কম নয়। বিবাদীরা ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করে দেশত্যাগের পাঁয়তারা করছেন। বিবাদীরা দেশত্যাগ করার সুযোগ পেলে বাদী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অযোগ্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিবাদী মোহাম্মদ মহসিনের পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে উল্লেখ করেন, মোহাম্মদ মহসিন দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী এবং শিল্প উদ্যোক্তা। টেক্সটাইল শিল্পে বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পরিশোধ করেছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি নন। কোভিড মহামারিসহ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যবসায়িক বিপর্যয় হওয়ায় যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। ঋণের বিপরীতে মূল্যবান সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট বন্ধক রয়েছে। বিবাদীদের দেশত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলে বিবাদীর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে। দুই পক্ষকে শুনে শুনানিতে আদালত বলেন, নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় নালিশি ঋণ দুই দফা পুনঃতফশিল করা হলেও বিবাদীরা ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসেননি। বন্ধককৃত সম্পত্তি দ্বারা সম্ভাব্য ডিক্রি পরিতুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। সুদ মওকুফসহ পুনঃতফশিল সুবিধা লাভের পরও নালিশি ঋণের কিয়ংদশও পরিশোধ না করায় প্রতীয়মান হয় বিবাদী একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি। তাই তার বিদেশ গমনের অধিকার বিচারিক সিদ্ধান্তের অধীন থাকা সমীচিন মনে করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবহাওয়ায় সুখবর নেই
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে পাঁচ চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা