কক্সবাজারে গত কয়েক দিন ধরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড় ধসের আশংকা তৈরি হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর রাত পর্যন্ত শহর ও শহরতলীর বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট অসংখ্য পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত ৬ দিন ধরে কক্সবাজারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতের ভারী বর্ষণে শহরের কলাতলী, ঘোনারপাড়া, পাহাড়তলী, শহরতলীর দরিয়ানগর, হিমছড়িসহ বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া মেরিন ড্রাইভ, মহেশখালী, সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া বিভাগের পূর্ভাবাসেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশংকা করা হয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির কারণে সাগরে বোট চলাচলে ৩ নং সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। লঘুচাপটি নিম্নচাপ থেকে পুনরায় সুস্পষ্ঠ লঘুচাপে পরিণত হয়ে এখন ভারতের উত্তর-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। ফলে ষষ্ট দিনের মতো কঙবাজার ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৮ বিভাগের কোনো কোনো স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। যে কারণে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ পাহাড় ধসের শংকা। আবহাওয়া বিভাগের ৩ নং সতর্কতা সংকেতও অব্যাহত রয়েছে।
দরিয়ানগরের কৃষক আসমত আলী জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের ভারী বর্ষণে দরিয়ানগর, হিমছড়ি ও কলাতলীর বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধসের কারণে দরিয়ানগর স্কুল পাহাড় এবং বনবিভাগের পিকনিক স্পটের রেস্ট হাউসটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। এগুলো যেকোনো সময় খালে ধসে পড়তে পারে।
কঙবাজারে পাহাড় ধসে প্রতিবছরই অনেকেই মারা যায়। তবে এক যুগের মধ্যে ২০১০ সালের জুনেই ঘটে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। এ সময় মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ৬ সেনা সদস্যসহ কঙবাজার ও টেকনাফে মারা যায় অর্ধশত ব্যক্তি। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অনেক বসতি সরানো হলেও এখনও হাজার হাজার লোক পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে বলে জানান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা জেলা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী।
তবে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতিগুলো অন্যত্র সরিয়ে আনা হয়েছে। যারা এখনও সরে যায়নি, তাদেরকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।