সাগরে বিরল জলস্তম্ভ

এটা বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনার সময় সেখানে যা কিছু থাকে তা ধ্বংস হয়ে যায়

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বঙ্গোপসাগরে গত সোমবার বিকালে দেখা মিলল বিরল জলস্তম্ভ বা ওয়াটার স্পাউটের। স্থলভাগের মতো জলরাশিতে যখন টর্নেডো হয় তখন ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘূর্ণায়মান বায়ুর টানে নলাকৃতি নিয়ে পানি মেঘের দিকে উঠতে থাকে। বিষয়টি অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো দেখায়। আবহাওয়াবিদরা এটাকে বলেন ওয়াটার স্পাউট।

এমন দৃশ্যকে কিছুটা বিরল বললেও বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলেন, জলস্তম্ভের ঘটনা ঘটার সময় সেখানে যা কিছু থাকে তা ধ্বংস হয়ে যায়। জাহাজ থাকলে জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া বা ছোট নৌযান থাকলে তা উপরে তুলে ফেলার মতো শক্তি তৈরি হয় পানি ও বাতাসে। জলস্তম্ভ যেখানে সংঘটিত হয় সেখানে পানি ও বাতাস একই সাথে প্রচণ্ড বেগে ঘূর্ণায়মান হয় এবং পানি উপরে নিয়ে যায়।

সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ করে জলস্তম্ভ তৈরি হয়। বিভিন্ন জাহাজ ও লাইটারেজ জাহাজ থেকে পিলারের মতো পানি উপরে উঠতে দেখা যায়। সাগরের বুক থেকে উপরের দিকে পানির একটি বড় প্রবাহ তৈরি হয়। এর মাধ্যমে প্রচুর পানি উপরের দিকে উঠতে দেখা যায়। বিভিন্ন জাহাজ থেকে এর ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই সময় বিভিন্ন জাহাজে আতংকও ছড়িয়ে পড়ে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই জলস্তম্ভ শেষ হয়ে যায়।

ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জলস্তম্ভকে ‘বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ’ মন্তব্য করে বলেন, ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি। বহির্নোঙরে প্রচুর জাহাজ এবং নৌযান চলাচল করে। এগুলোর কোনোটি যদি জলস্তম্ভে পড়ত তাহলে ধ্বংস হয়ে যেত।

তিনি বলেন, জলস্তম্ভ হচ্ছে জল দিয়ে মোড়ানো বাতাসের তৈরি পিলার। টর্নেডোর ফলে এটি সৃষ্টি হয়। স্থলভাগের মতো জলরাশির উপর শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টি হলে প্রবল বেগে ঘূর্ণায়মান বায়ুর টানে জলভাগের পানি টর্নেডোর কেন্দ্র বরাবর স্তম্ভাকারে ঘুরন্ত অবস্থায় উপরে উঠতে থাকে। আকাশ কালচে বর্ণ ধারণ করে বিজলী চমকে গর্জন করতে থাকে।

আবদুল মান্নান বলেন, এ ধরনের টর্নেডো ১ কিলোমিটারের মতো এলাকা নিয়ে হতে পারে। এটি সর্বোচ্চ ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই স্বল্প সময়ে টর্নেডো সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। এর ঘূর্ণায়ন গতি আশেপাশে বিস্তৃত হতে থাকলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
পরবর্তী নিবন্ধতখন মানবাধিকার কোথায় ছিল : শেখ হাসিনা