চাষাবাদ খরচ নামমাত্র। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মীরসরাইয়ে প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষা চাষের পরিধি। এবার উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফলন হয়েছে। শীত শেষে হাজারো কৃষকের ঘরে পুঁজিবিহীন ফসল ঘরে উঠতে শুরু করেছে। কাঙ্ক্ষিত ফলন হওয়ায় বেশ খুশি কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকৃতির সুন্দরতম ফসল সরিষা একসময় এই অঞ্চলে তেমন আবাদই হত না। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষকরা গণমাধ্যম ও কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এর সহজ চাষাবাদ পদ্ধতি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়। কয়েক বছর পূর্বে মাত্র কয়েক হেক্টর জমিতে চাষাবাদের মাধ্যমে মীরসরাইয়ে শুরু হয় সরিষা চাষ। পর্যায়ক্রমে এর আবাদ বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ৩২০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। বর্ষার পর বিশেষ করে আমন উঠার পর শুধুমাত্র জমিতে একবার লাঙল দিয়ে মাটি উপড়ে দানা ছিটিয়ে দিলেই সুন্দরভাবে উঠে যাচ্ছে সরিষার চারা। সার–পরিচর্যা কিছু ছাড়াই বেড়ে উঠে সরিষার গাছ। পৌষ থেকে হলদে ফুল ফুটতে শুরু করলে চারদিক সুশোভিত হয়ে উঠে। বসন্তের ফাগুনে ফুল ডানা গুটিয়ে সরিষা হিসেবে প্রস্তুত হতে শুরু করে। বর্তমানে কৃষকরা ধানের গোছার মত করে সরিষা কেটে মাঠে সাজিয়ে রাখছেন। একটু শুকিয়ে উঠলেই বাড়ি নিয়ে যাবেন। শুক্রবার সকালে পূর্ব খৈয়াছড়া ফসলের মাঠে সিরাজুল ইসলাম নামের এক কৃষক সরিষার গাছ নিজের জমিতে কেটে স্তূপ করে রাখছিলেন। ফলন কেমন হলো জানতে চাইলে বলেন, এই জমিটাতে তেমন ভালো ফলন হয়নি। তবে আরেক জমিতে ৪ গন্ডায় প্রায় চল্লিশ হাজার টাকার সরিষা উৎপাদন হয়েছে।
খরচ কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার তো কোনো খরচই হয়নি। কারণ বীজ পেয়েছি সরকারিভাবে, জমিতে লাঙল দিয়েছি নিজেই। কোনো সারও দিতে হয়নি। কারোরই কি খরচ হয় না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ বীজ কিনলে বা নিজে চাষ না করলে কিছু খরচ হয়, তাও খুবই অল্প।
এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, এবার উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছে মাত্র ৬০ হেক্টর। এর আগে মাত্র ২০ হেক্টর। তিনি আরো বলেন, এবার ফলনও ভালো হয়েছে।