সরকার জাহাজের চেয়ে নাবিকদের জীবনকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে

চট্টগ্রামে তথ্যমন্ত্রী ।। ফখরুল জবাব দিক-ভারত কেন ভোট দানে বিরত ছিল?

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৬ মার্চ, ২০২২ at ৭:৩০ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে সংঘাত নয়। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হোক, শান্তি বিরাজ করুক সেটিই আমাদের চাওয়া। জাতিসংঘে কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, ভারতও বিরত ছিল। এখন ভারত কী কারণে বিরত ছিল মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যদি সেই ব্যাখ্যাটা দেন খুব ভালো হয়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসা থেকে তথ্যমন্ত্রী রাজধানীর আগারগাঁও ফিল্ম আর্কাইভে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ থেকে নাবিকদের উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী যখন কোনো জাহাজ পরিত্যক্ত হয় তখন কিন্তু সেই জাহাজের মালিকানা কোথায় যাবে সেটি বলা যায় না। সরকার জাহাজের মালিকানার চেয়ে নাবিকদের জীবন রক্ষাকেই গুরুত্ব দিয়েছে। সেজন্য জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জাহাজের নাবিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকার রাখেন
জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়া থেকে ভারত কেন বিরত ছিল তা বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলবেন কি? এমন প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, বহুক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সময় ভোটদানে বিরত থাকে। এবার যখন জাতিসংঘে প্রস্তাব আনা হয়, তখন ভারতসহ আরো অনেকগুলো দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকা সংবিধানের মূল্যবোধের পরিপন্থী, রাশিয়ার সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য কৌশল অবলম্বন করেছেন বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে কোনো ইস্যু নাই তো, তাই মীর্জা ফখরুল জাতিসংঘ ও ভোটদান নিয়ে কথা বলেন। আবার খালেদা জিয়াকে যদি বিদেশ পাঠানো না হয় জীবন সঙ্কটাপন্ন- এগুলো বলে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সব বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে বিএনপি আসলে খেই হারিয়ে ফেলছে।
বাংলাদেশ এখন দ্রব্যমূল্যের দিক থেকে দুর্বিষহ অবস্থানে আছে মীর্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে সবসময় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। যখন চল্লিশের দশকে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয় তখন দ্রব্যমূল্য অনেক কম ছিল। তখন এক টাকায় অনেক কেজি চাল পাওয়া যেত। এখন তো এক টাকায় এক কেজি চালও পাওয়া যায় না। যখন এক আনায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেত তখনো কিন্তু দুর্ভিক্ষ হয়েছে। কারণ তখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ছিল না।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর আমেরিকা, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, ইউকে, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পাকিস্তানসহ পৃথিবীর সবদেশে গত কয়েক বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, আন্তর্জাতিকভাবেও বেড়েছে। কিন্তু মাথাপিছু আয় সবজায়গায় বাড়েনি। আমাদের দেশেও ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়েনি তা নয়, কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তার সাথে অনেক বেশি বেড়েছে মানুষের মাথাপিছু আয়। হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে তিন গুণ, অন্যান্য আয়ের মানুষেরও ক্রয়ক্ষমতা তিন গুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেখতে হবে মানুষ ক্রয় করতে পারে কিনা, মানুষ আগের চেয়ে ভালো আছে কিনা। বাংলাদেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে, এজন্য মানুষের মনে স্বস্তি আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্রিকেট নিয়ে মারামারি, থামাতে গিয়ে আক্রান্ত যুবক
পরবর্তী নিবন্ধইসির ডেটা এন্ট্রি অপারেটর গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমাণ্ড