প্রতিবছর নভেম্বর এলেই শুরু হয় নগরীর ৯টি সরকারি স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন গ্রহণ শেষে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয় ডিসেম্বরে। পরীক্ষার পর ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। তবে এবার সরকারি স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত প্রস্তুতি এখনো শুরু করতে পারছে না জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন এখনো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনার অপেক্ষায়। এদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ার পদ্ধতি এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি মাউশি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তবে আগের পদ্ধতির (সরাসরি পরীক্ষা) পাশাপাশি বিকল্প পদ্ধতি নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছে মাউশি।
বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে অনলাইনে এমসিকিউ আকারে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া যায় কি না, সেটিও ভাবনায় রয়েছে। এই বিকল্প উপায় যুক্ত করেই সরকারি স্কুলে ভর্তি পদ্ধতি সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ মাউশির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, শিক্ষার্থী ভর্তিতে আমরা এখনো আগের পদ্ধতি মাথায় রাখছি। তবে সরাসরি পরীক্ষা গ্রহণের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টিও জড়িত। তাই বিকল্প পদ্ধতির কথাও ভাবতে হচ্ছে। সে হিসেবে অনলাইনে এ পরীক্ষা নেয়া যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অবশ্য অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ, সব শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় ডিভাইস নাও থাকতে পারে। সব দিক বিবেচনা করে আমাদের আলোচনার সার-সংক্ষেপ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেয়, সেভাবেই পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২য় থেকে ৮ম শ্রেণির ক্ষেত্রে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নিয়েই শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয় সরকারি স্কুলে। আর বিগত কয়েক বছর থেকে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার নিয়ম করা হয়েছে প্রথম শ্রেণিতে। এবারও প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে বলে মাউশি সূত্রে জানা গেছে। ভর্তি পরীক্ষার সময় সরকারি স্কুলগুলোকে তিনটি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়। তিনটি ক্লাস্টারেই আবেদনের সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা।
মাউশির তথ্য মতে-দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি ভর্তিতে বাংলা বিষয়ে ১৫, ইংরেজিতে ১৫ এবং গণিতে ২০ নম্বরসহ মোট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হয়। আর চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি ভর্তিতে বাংলায় ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এবং গণিতে ৪০ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের।
উল্লেখ্য, নগরীর ৯টি সরকারি স্কুলের ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে প্রায় ৩৯০৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায় গতবার। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণিতে ২ হাজার ৪০, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬৫৮, ৮ম শ্রেণিতে ১৭০ এবং ৯ম শ্রেণিতে ১ হাজার ৪০টি শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এবারও ৪ হাজারের কিছু কম-বেশি শিক্ষার্থী সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির সুযোগ পেতে পারে।