সরকারি-বেসরকারি ভবনে উড়ছিল কালো পতাকা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৫ মার্চ, ২০২৩ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

একাত্তরের এদিনও ঢাকা ছিল মিছিলের নগরী। সরকারিবেসরকারি ভবনে এবং যানবাহনে উড়েছিল কালো পতাকা। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক করতে বিকালে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা আসেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান নবনিযুক্ত সামরিক গভর্নর ‘বাংলার কসাই’খ্যাত লে. জেনারেল টিক্কা খান। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে নতুন সামরিক ফরমান জারির প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে সভা হয়। সেখানে বাংলাদেশ রক্ষায় সব নাগরিককে অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়। শেষে বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিল ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সংগ্রাম পরিষদের মিছিলটি কাকরাইল, বেইলি রোড হয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে। ইয়াহিয়া খান তখন ওই ভবনেই অবস্থান করছিলেন। ভবনের সামনে সামরিক বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিতি ছিল। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে ঢাকার চেকপোস্টগুলো তুলে নেয়। এদিন কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে নারীদের এক সভা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টিভিশিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান করেন। চিকিৎসকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সভা থেকে অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং মুক্তি আন্দোলনের লক্ষ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামে প্রস্তুত হওয়ার জন্য জনতার প্রতি আহ্বান জানান

১৪ মার্চ করাচির সভায় পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোর দুই দলের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হয় এদিন। পশ্চিম পাকিস্তানে জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তান, ন্যাপ (ওয়ালী), মুসলিম লীগ (কাউন্সিল) এবং পিডিপির নেতারা এক বিবৃতিতে ভুট্টোর ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্যে তাকেই দায়ী করেন। রাতে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এক বিবৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের এই আহ্বানে জনগণের নিরঙ্কুশ সাড়া পাওয়া গেছে। এদিন চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের সমাবেশ। অধ্যাপক আবুল ফজলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমেদ, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বাংলাওয়াশ
পরবর্তী নিবন্ধকিছু অবহেলা চিহ্নিত, ৯ সুপারিশ