প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র মালিকানাধীন সব লিমিটেড কোম্পানিকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) প্রস্তাবিত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ার সময় সরকার প্রধানের এই নির্দেশনা আসে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। একনেকে রাঙামাটির একটিসহ মোট ১০ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।
বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিটিসিএল সরকারি তহবিল থেকে ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছিল। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, বিটিসিএল তো একটি কোম্পানি, তারা তো নিজেরা টাকা আয় করে। তাহলে তারা নিজেরা টাকা দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারছে না কেন? এটা তো করা উচিত। তখন উপস্থিত (বিটিসিএলের) প্রতিনিধি বলেন, তারা নানা কারণে পারছেন না। তারা চেষ্টা করছেন। সেই সুবাদে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বললেন যে, না এটা দীর্ঘদিন আর চলবে না, সম্ভব নয়। আপনারা তাড়াতাড়ি নিজেদের পায়ে দাঁড়াবার ব্যবস্থা করেন। মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেসব কোম্পানি আমরা বানিয়েছি সেটা টেলিযোগাযোগ হোক, সিভিল এভিয়েশন হোক, পানির ওপরে হোক বা সমিতির হোক; দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিয়ে চালানো, এটা ব্যবসায়িক সেন্সের মধ্যে পড়ে না। কত দিন দেব আমরা?
এ বিষয়ে সরকার কোনো পথনির্দেশ দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, না, সরকার কোনো রোড ম্যাপ দেয়নি। আপনারা ব্যবসা করবেন। আপনাদের বুদ্ধিসুদ্ধি ইউজ করে ব্যবসা করেন। আমি আপনাকে রোড ম্যাপ দিলে আপনাদের স্বাধীনতা, স্বকীয়তা কোথায় থাকবে?
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছেন, সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে আয়-ব্যয় করবেন, ব্যালেন্স শিট দেখাবেন, নিজেরা চলবেন, এই হলো কথা।
১০ প্রকল্প অনুমোদন : নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুরের তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে সেচের পানি নিশ্চিত করতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে সরকার। গতকাল ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সমপ্রসারণ’ শীর্ষক এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই প্রকল্পসহ গতকাল মোট ১১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান। অন্য প্রকল্পের মধ্যে আছে, ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ‘রাঙামাটি জেলার কারিগর পাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।