সময় এখন সাবধানতার

সংক্রমণ কমলেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ মে, ২০২১ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

এপ্রিলের মাঝামাঝিও পরীক্ষাকৃত নমুনায় দৈনিক ২৫-৩০ শতাংশ হারে করোনা শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। তবে বেশ কয়দিন ধরে শনাক্তের এ হার কমে ১০-১৫ শতাংশে নেমেছে। সরকারের কঠোর বিধি নিষেধ ও লকডাউন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে শনাক্তের হার কমলেও এখনই আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই মন্তব্য করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এখনই তা বলা যাবে না। যদিও শনাক্তের হার কমেছে। এটি অবশ্যই কঠোর বিধি-নিষেধ ও লকডাউনের সুফল বলা যায়। সংক্রমণের নিম্নগতি ধরে রাখতে হলে লকডাউন উঠে গেলেও সকলের মাস্ক পরা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। মোটকথা সামনের দিনগুলোতেও সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সাবধানতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।
শনাক্তের হার কমলেও সংক্রমণ থেমে নেই বলে মনে করেন বিআইটিআইডি ল্যাবের প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ। তিনি আজাদীকে বলেন, শনাক্তের হার কমছে এটা ঠিক। তবে ১০-১৫ শতাংশও কম নয়। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও কিন্তু কমে যাচ্ছে। যা উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপায় হচ্ছে- বেশি বেশি টেস্ট করা। টেস্টে পজিটিভ শনাক্ত হলে দ্রুত রোগীকে আলাদা করে ফেলা। একই সাথে ওই রোগীর সংস্পর্শে আসাদেরও আলাদা করা এবং নমুনা পরীক্ষা করানো। কিন্তু মানুষ যদি নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং পরীক্ষা না করায়, তাতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ কিন্তু থামানো যাবে না। তাই এখনই আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। বরং বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন ডা. শাকিল আহমেদ। বিধি-নিষেধ উঠে গেলেও ঘরের বাইরে গেলে মানুষকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে হবে বলে মন্তব্য করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। তিনি বলেন, শনাক্তের হার কমছে মানে আবার বেপরোয়া চলাফেরা নয়। এ ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কয়েকমাস আগে কিন্তু শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। সংক্রমণ কমায় মানুষও অনেকটা স্বাভাবিক চলাফেরায় ফিরে যায়। মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা, মাস্ক পরতে অনীহা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণ আবার বেড়েছে। এখনো চলাফেরায় বেপরোয়াভাব চলে এলে, গণজমায়েতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আয়োজন করলে, সভা-সমাবেশ করলে সংক্রমণ বাড়তে সময় লাগবে না। এসব বিষয়ে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
সঠিক নিয়মে মাস্ক পরলে সংক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায় মন্তব্য করে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও প্রধান নির্বাহী ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, একই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেন তিনি। সংক্রমণ একদম নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, সংক্রমণ শনাক্তের হার নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। অবশ্যই সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
সামনে ঈদ আসছে। ঈদের সময়ও সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সবাই সচেতন হলেই কেবল এ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধথেমে নেই ফুটপাত দখল