সমসাময়িক ভাবনা

বিপ্লব বড়ুয়া | সোমবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

যে জমানায় আমাদের বসবাস, এখানে ভালোর মধ্যে বা নির্ভেজাল জীবনযাপন করতে চাইলে নিজেকে বধির হয়ে না থাকা ছাড়া উপায় নাই। যুগটা বড়ই অস্থিরতাপূর্ণ! কোনটা স্বাভাবিক আর কোনটা অস্বাভাবিক বোঝা বড়ো মুশকিল। আমাদের সহনশীলতা হ্রাস পেতে পেতে একেবারে শূন্যতায় এসে ঠেকেছে। সবাই কেমন যেনো অতি অল্পতেই অভিন্ন এক অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে মরিয়া। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে – সবাই উপরের আসনটা পেতে চায়। কেউ কাউকে একবিন্দু ছাড় দিতে রাজী নয়। কেউ ছোট হয়ে পরিচয় দিতে নারাজ। সবাই দাদাগিরি করতে চায়। এই হলো – আজকালকার হালচাল! এখন ধর্মটা লালনের চেয়ে বাহনের মাধ্যম হয়ে গেছে। তাই, দিনে দিনে আমাদের মনুষ্যত্ববোধ সমাজ হতে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য যারা সত্যবাদী, স্পষ্টবাদী, ন্যায়বান, সৃজনশীল, প্রগতিবাদী কিংবা রুচিশীল – এই সমাজে তারা আজ নিগৃহীত, অবাঞ্চিত, অবহেলিত নতুবা প্রহসনের দন্ডে দন্ডিত! তাদের পক্ষে কথা বলার, তাদের নিয়ে চিন্তা করার মানুষ আমাদের বিষাক্ত সমাজ হতে বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই। তবে, সব বোকারা এখনো মরে যায়নি। কালেভদ্রে , আওয়াজ শোনা যাই বৈকি! গুণীজন, আলোকিতজন চেনার জন্য নিজের মধ্যে গ্রন্থগত বিদ্যার পাশাপাশি মানবিক জ্ঞানের চর্চা করা নিতান্ত জরুরি। একজন ভালো মনের মানুষ হতে পারলে, একজন সুস্থ চেতনার পরোপকারী হতে পারলে, একজন অন্যের হিতকামী হতে পারলে, একজন অন্ধজনে আলো দিতে পারলে, একজন পথহারা নাবিককে সঠিক পথ প্রদর্শন করতে পারলে, একজন রুগ্ন ব্যক্তির সেবাদান দিতে পারলে, একজন বিপদগামীকে সঠিক পথে আনয়নে ভূমিকা রাখতে পারলে, সত্য ও ন্যায়ের পথে সর্বদা অনড় থাকতে পারলেই তিনি মানবিক মানুষ। তিনি ধার্মিক। তিনি পন্ডিত। তিনি ধর্মযাজক। তিনি পুরোহিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপূর্ণ ভালোবাসায় দেশ গড়ব
পরবর্তী নিবন্ধফতেয়াবাদে মন্দিরের দানবক্স ভেঙে চুরি