সমরেশ বসু: অন্যতম সেরা ঔপন্যাসিক

| রবিবার , ১২ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

সমরেশ বসু(১৯২৪১৯৮৮)। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা ঔপন্যাসিক। তিনি কালকূট ও ভ্রমর ছদ্মনামে উল্লেখ্যযোগ্য সাহিত্য রচনা করেছেন। তার রচনায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, শ্রমজীবী মানুষের জীবনসহ বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সুনিপুণ বর্ণনা ফুটে উঠেছে। তিনি ১৯৮০ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। কথাসাহিত্যিক সমরেশ বসু ১৯২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত রাজনগর গ্রামে পৈতৃক বাস্তু ভিটায় জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম সুরথনাথ বসু। কিন্তু সমরেশ বসু নামেই লেখক পরিচিতি সমধিক। বাবার নাম মোহিনী মোহন বসু। মায়ের নাম শৈবলিনী বসু। সমরেশ বসুর শৈশব কাটে বাংলাদেশের বিক্রমপুরে আর কৈশোর কাটে কলকাতার উপকণ্ঠ নৈহাটিতে। বিচিত্র সব অভিজ্ঞতায় তার জীবন ছিল পরিপূর্ণ।

এক সময় মাথায় ফেরি করে ডিম বেচতেন। প্রবল দারিদ্র্যের মধ্যেও লেখালেখিই ছিল তাঁর একমাত্র পেশা। নিজ আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি তিনি। ১৯৪৩৪৯ সাল পর্যন্ত ইছাপুরের কামান ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। এ সময় কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সাথে তিনি জড়িয়ে পড়েন। কমিউনিস্ট পার্টি অবৈধ ঘোষিত হলে ১৯৪৯৫০ সালে তাকে জেল খাটতে হয়েছিল। জেলে অবস্থানকালে তিনি প্রথম উপন্যাস ‘উত্তরঙ্গ’ লিখেন। মুক্ত হয়ে সমরেশ বসু লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেন। ২১ বছর বয়সে উপন্যাস ‘নয়নপুরের মাটি’ লিখেন। তার প্রথম ছোটগল্প ‘আদাব’।

বিষয় বৈচিত্র্য এবং আঙ্গিকে নিত্য ও আমৃত্যু ক্রিয়াশীল লেখকের নাম সমরেশ বসু। দেবেশ রায় তাঁকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লেখক এবং পেশাদার লেখক হিসেবে অভিহিত করেছেন। লেখক হিসেবে সমরেশ আমৃত্যু যে লড়াই করেছেন, তার কোনো তুলনা নেই। তার নিজের জীবনই আরেক মহাকাব্যিক উপন্যাস। চিরসখানামের প্রায় ৫ লাখ শব্দের বিশাল উপন্যাসে সেই লড়াইকে স্মরণীয় করে রেখেছেন তারই পুত্র নবকুমার বসু। ছোটদের জন্যে তার সৃষ্ট গোয়েন্দা গোগোল অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। গোগোলকে নিয়ে বহু ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন যা শিশুসাহিত্য হিসেবে সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গোগোলের দুটি কাহিনি গোয়েন্দা গোগোল ও গোগোলের কীর্তি নামে চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছে সমরেশ বসুর উপন্যাসের সংখ্যা ১০০। তিনি ১৯৮০ সালে আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধজহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এবাদতখানা স্থাপনের দাবি