সমকালের দর্পণ

আমাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাঙ্গন

মেজর মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম (অব.) | রবিবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

আমার একান্ত প্রতীতি প্রতিটি কোমলমতি ছাত্রছাত্রী তার শিক্ষাজীবন শুরু করে এক বুক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে। বাবা মা’রা ও তার সন্তানকে শিক্ষাঙ্গনে পাঠানোর সময় স্রষ্টার কাছে আনত প্রার্থনায় মগ্ন হন তার ছেলে মেয়ে যেন মানুষের মত মানুষ হয়। আমি একথা কখনো শুনিনি এমনকি ঠাট্টার ছলেও কোন শিক্ষার্থী তার শিক্ষা জীবনের শুরুতে কামনা বা প্রার্থনা করছেন দয়াময় আমাকে সন্ত্রাসী বা গুন্ডা বানিয়ে দিও, আমার দাপটে যেন শিক্ষাঙ্গনে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, সেই অরাজক নৈরাজ্যে আমিসহ আমার শিক্ষাঙ্গনের সকল ছাত্রছাত্রী শিক্ষা গ্রহণ থেকে যেন বঞ্চিত হয়। আমি এমন কোন বাবা মা দেখিনি যিনি বা যারা কামনা করছেন বা প্রার্থনা করছেন হে দয়াময় আমার ছেলেটিকে সন্ত্রাসীগুন্ডা বা মাস্তান বানিয়ে দিও যেন তার ভয়ে আশেপাশের লোকজন আমাকে ভয় করবেসমীহ করবে। বরং আমি দেখেছি সন্তানকে শিক্ষাঙ্গনে পাঠিয়ে বাবা মা’দের সেকি আশা শিক্ষাজীবন শেষে একদিন সন্তান তার মুখ উজ্জ্বল করে ঘরে ফিরবে। সন্তানের অর্জিত জ্ঞানের আলোয় দশদিগন্ত আলোকিত হবে। আমি এমন কোন ছাত্রকে দেখিনি শিক্ষা জীবনের শুরুতে যে ছাত্রের জীবনের লক্ষ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে সে কন্ট্রাক্টর হবে, সে ভর্তি পরীক্ষার ফি’তে চাঁদাবাজি করে ভাগ বসাবে।

স্বপ্ন আর আশায় বুক বেঁধে অনেক রাত জাগা প্রস্ত্তুতির ফসল আমাদের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া। আমার হৃদয়ে বহুবার রক্তক্ষরণ হয়েছে যখন দেখেছি সময়ের বিবর্তনে আমাদের এই সব মেধাবী মুখগুলির অনেকে কোনো নেতা বা পাতি নেতার বাসার সামনে দলবদ্ধ হয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে আছেন নেতার সাক্ষাতের অপেক্ষায়। যে সময়ে তারা নেতার বাসার সামনে অপেক্ষমাণ তখন হয়ত শিক্ষাঙ্গনে তাদের ক্লাস চলছে। বাবা মা’রা নিশ্চিত হয়ে থাকেন তাদের সন্তান লেখা পড়ায় ব্যস্ত। অথচ তারা জানেনা তাদের প্রিয় সন্তান লেখাপড়ার অঙ্গন ছেড়ে তখন কোনো এক নেতার বাসার সামনে বসে থেকে তাদের মা বাবার আশার আকাশে নিরাশার মেঘ আবাহনে উদগ্রীব।

এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা এখানে বর্ণনা করা প্রাসঙ্গিক। আ জ ম নাসির উদ্দিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী। এই শহরের গণমানুষের অন্যতম প্রিয় নেতা মরহুম এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, তিনি আর আমি তার বাসার শোবার ঘরে সকালের প্রাতঃরাশ গ্রহণ করছি, এমন সময় ডাঃ দীপু মনি (তখন এম পি, এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী) আরো দুই মহিলাসহ প্রবেশ করেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী তাদের বসতে বলেন। ডাঃ দীপু মনি জানান তিনি মেয়র নির্বাচনে প্রচার কাজে অংশগ্রহণ করতে এসেছেন। ডাঃ দীপু মনি তার সাথে আসা ঐ দুজনের পরিচয় দেন। দুই মহিলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। কোন রাখ ডাক না করে জনাব চৌধুরী তাদের প্রশ্ন করেন “আজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ নাকি?” কাঁচুমাচু হয়ে তাঁরা উত্তর দেন “খোলা”। জনাব চৌধুরী আবার জিজ্ঞেস করেন “আপনাদের ক্লাশ নাই?” দুজন নিরুত্তোর। আমাকে হতভম্ব করে জনাব মহিউদ্দিন চৌধুরী ডাঃ দীপু মনির দিকে ইঙ্গিত করে ঐ দুই শিক্ষয়ত্রীকে বলেন “উনি রাজনীতি করেন তাই রাজনীতি করতে এখানে এসেছেন, আপনারা শিক্ষকতা করেন আপনারা কেন আপনাদের শিক্ষকতা ছেড়ে এখানে এসেছেন? আপনারা এখনই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত যান” ডাঃ দীপু মনিকে একা রেখে সুর সুর করে দুজন সেদিন তাদের কর্মস্থলে ফেরত যান। মহিউদ্দিন চৌধুরীকে মনে মনে আমি অভিবাদন জানাই।

আজ খবরের কাগজ খুলে যখনই দেখি রাম দা হাতে দাঁড়িয়ে আছে ছাত্রলীগের এক উপদলের নেতা আরেক উপদলের কাউকে কোপানোর জন্য। তখন অবচেতনে ভাবি কি নির্মম পরিহাস বন্ধুর জন্য কোন দুস্প্রাপ্য বই বা নোট নিয়ে দাঁড়িয়ে নয় বন্ধু, জ্ঞান অর্জনের তুমুল তুখোর কোন বিতর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষায় নয় বন্ধু, বরং এক মেধাবী মুখ আরেক মেধাবী মুখকে কুপিয়ে পঙ্গু করার জন্য হত্যা করার জন্য হাতে অস্ত্র নিয়ে অপেক্ষায়।

আহা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে এ কি হন্তারক সময়!

আজ যদি প্রশ্ন করি এই হন্তারক সময় কিসের ফসল বা কি ভাবে এর উৎপত্তি? কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করতে গিয়ে আমাদের মেধাবী ছাত্ররা সন্ত্রাসী হওয়ার বিবর পথে পা বাড়িয়েছে? পড়া লেখা বাদ দিয়ে কোপাকোপির পথে তারা কেন মাতাল? নিজে লেখা পড়া বাদ দিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অন্যদের পড়ালেখায়ও ব্যাঘাত ঘটানো এসব কেন হচ্ছে?

এসব যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি, আমাদের রাজনীতির অপসংস্কৃতির ছায়া, শিক্ষা ব্যবস্তার সৃষ্টি বিমুখতা, শিক্ষকদের অধিকাংশেরই প্রজ্ঞাহীনতা আমাদের শিক্ষাঙ্গন এবং শিক্ষার্থীদের অরাজকতা আর হানাহানির পথে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী সৃষ্টিতে রাজনীতির অপসংস্কৃতির ছায়া যেভাবে পড়ছে, রাজনীতিতে আমাদের যে চলমান অবস্তা তাতে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মেধার চেয়ে পেশী শক্তিই প্রাধান্য বিস্তার করে চলেছে। এ কারণে আমাদের ছাত্র সমাজ রাজনৈতিক নেতৃত্বে আসার জন্য মেধা বিকাশ থেকে পেশী শক্তিকেই পথ হিসাবে বেছে নিচ্ছেন এতে কোন সন্দেহ নাই। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা মননশীলতার চেয়ে,মানবিকতা বিস্তারের চেয়ে বস্ত্তুতান্ত্রিকব্যক্তিকেন্দ্রিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রণীত। দুটি ছোট্ট উদাহরণ দিই। প্রথমটি, চীনে তখন একদিকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উদ্দাম অন্যদিকে নৈরাজ্য আর ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অন্যতম ফসল তাদের শিক্ষানীতি। আমেরিকান ফ্রি ল্যান্স সাংবাদিক ফেলিক্স গ্রীন সেই কঠিন সময়ে চীন ভ্রমণে যান। ফেলিঙ নিম্ন মাধ্যমিক পর্য্যায়ের এক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি এক ছাত্রীর হাত থেকে একটি বই নিয়ে জিজ্ঞেস করেন এটি কার বই? মেয়েটি উত্তরে বলে “আমাদের” ফেলিক্স ধরে নেন মেয়েটি হয়ত তার প্রশ্ন বুঝতে পারেনি। একটু এগিয়ে এক ছেলের হাত থেকে একটি পেন্সিল নিয়ে জিজ্ঞেস করেন এটি কার পেন্সিল? ছেলেটির উত্তর “আমাদের”। এবার ফেলিঙের বিস্ময়ের পালা। চীন তার সমাজ বিনির্মাণে আমিত্ব কেন্দ্রিকতাকে দূর করতে তখনই শিক্ষাকে বাহন হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করে। ফেলিক্স তখনই বুঝে নিয়েছিলেন আগামীর চীনকে পশ্চিমা ধনবাদী বিশ্বের থামানো মুশকিল হবে। ফেলিক্স তার বই “দি ওয়াল হ্যাজ টু সাইড” এসব প্রাণবন্তভাবে তুলে ধরেছেন। ফেলিক্স এর সেই ভবিষ্যৎ দেখা। এখন চীন কোথায় দেখুন।

দ্বিতীয় উদাহরণ। দক্ষিণ আফ্রিকীয় জাসুয়া জনগোষ্ঠীর বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেছেন ইউরোপিয় এক সাংবাদিক। স্কুলের ছেলেদের মাঝে আফ্রিকীয় সমাজের সাম্য সমতা তথা সমব্যথী এসবের মিলিত শব্দ “আবানু‘” কি ভাবে কাজ করে তা যাচাই করার জন্য সাংবাদিক সাহেব এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে একটি ফলভর্তি ঝুড়ি রাখা হয়। প্রতিযোগী ছাত্রদের বলা হল দৌড়ে যে প্রথম হবে ঐ ফলের ঝুড়ি হবে তার। ছাত্ররা সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়ায়। প্রতিযোগিতার দৌড় শুরু হলে দেখা গেল প্রতিযোগী ছাত্ররা সব হাত ধরাধরি করে দৌড়ে একসাথে ফলের ঝুড়ির কাছে গিয়ে হাজির, কেউ আগেও নয় পরেও নয়।

সাংবাদিক কারণ জানতে চাইলে, ছাত্রদের উত্তর আমরা একজন আগে গিয়ে পুরা ফলের ঝুড়ি নিয়ে অন্যদের কষ্ট দিতে চাই না, আমরা যা পাই তা সবার মাঝে সমানভাবে ভাগ করে নিই। এই শিক্ষাই হয়ত দক্ষিণ আফ্রিকায় একজন নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম দিয়েছে, এ শিক্ষাই হয়ত সমস্ত বিশ্ব যখন নীরব দর্শক তখন দক্ষিণ আফ্রিকাকে আন্তর্জাতিক আদালতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার এই নৈতিক মানবিক দিক কই। আমাদের শিক্ষাঙ্গনে মেয়েদের পদচারণা এখন ঝুঁকিতে। এটি সহপাঠিদের দিক থেকে যেমন স্বীয় শিক্ষকদের দিক থেকেও তেমনি উদ্বেগজনক।

বঙ্গবন্ধু হয়ত অনেক আশা নিয়ে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট প্রবর্তন করেছিলেন। এ এ্যাক্টের বদৌলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোন ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া র্নিবিঘ্নে তার শিক্ষা দান, গবেষণা কর্ম ইত্যাদি নিয়ে স্বীয় অঙ্গনে পদচারনা করবেন তাই ছিল মূল লক্ষ্য। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিষ্ঠ সংখ্যক শিক্ষক ৭৩ এ্যাক্টের বদৌলতে এখন এক এমন স্বাধীনতা ভোগ করছেন যার কারণে কোনো শিক্ষাদান ছাড়াই অনেকে বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অধিকাংশ শিক্ষক কোন ধরনের গবেষণায় তথা সৃষ্টিশীলতায় নিজেকে নিয়োজিত না করে শুধু সময়ের পালে হাওয়া দিয়ে রাজনৈতিক লেজুড় বৃত্তির মাধ্যমে ‘অধ্যাপক’। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এসব দেখেশুনে হয়ত তার হৃদয় মন বেদনায় মুষড়ে পড়ত আজ। বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট৭৩ যে মহান উদ্দেশ্য থেকে উৎসারিত তার মূলে এখন আমরা প্রতিনিয়ত কুঠার হেনে যাচ্ছি। এর ফল হচ্ছে মারাত্মক। নৈতিক ভিত্তি যার দুর্বল, পায়ের নীচে মাটি যার টলমল তিনি কি করে শক্ত করে দাঁড়াবেন! টলটলায়মান অনৈতিক ভূমির উপর দাঁড়ানো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রশাসন শিক্ষক সবারই প্রয়োজন অবলম্বন। সেই অবলম্বন তারা তৈরী করে নিচ্ছেন আমাদের মেধাবী মুখগুলিকে সন্ত্রাসী মাস্তান আর ক্যাডার বানিয়ে। অথচ এইসব মেধাবী মুখ অনেক স্বপ্ন নিয়ে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এরা নিশ্চিতভাবে কেউ মধ্যবিত্ত কেউ উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। কারণ উচ্চবিত্তদের সন্তানরা বিত্তের বলে দেশ থেকে বহু আগে পাড়ি জমিয়েছে বিদেশের নাম করা শিক্ষালয়ে পড়ালেখার জন্য। মধ্যবিত্ত আর উচ্চ মধ্যবিত্ত এই পরিবারের বাবা মা’রা, ভাইবোনরা অনেক আশা নিয়ে বুক বেঁধে বসে আছেন তাদের সন্তান বা স্বজন একদিন মানুষের মত মানুষ হয়ে ফিরবে বলে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা অনেকেই জানেন না তাদের আশা পূরণ হবার নয়। কারণ আমাদের বেশীর ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় অযোগ্যদের দ্বারা পরিচালিত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেঁধেছে অযোগ্যতা আর দুনীতি।

আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসানের ওপর আমার অনেক আস্থাএটা তার শিক্ষা, লব্ধজ্ঞান এবং দেশের প্রতি তার দায়বদ্ধতার জন্য, বাবার মত তিনিও স্পষ্ট করে হয়ত বলে দিবেন একদিন শিক্ষকবৃন্দ আপনাদের কাজ পাঠদান সেজন্য গবেষণায় রত হওয়া, রাজনীতি আপনাদের কাজ নয় রাজনীতি করতে হলে শিক্ষকতা ছেড়ে আসুন। আর ছাত্রদের তিনি কি আদেশ দিবেন সেটা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ভালই জানেন।

ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা (UNISA)। আমি যখন প্রিটোরিয়ায় তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এ মহান বিদ্যাপীঠে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন সে দেশের পুলিশ প্রধান। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রবেশদ্বারে উৎকীর্ণ রয়েছে ১৩ মার্চ ২০১৮ সালের নেলসন ম্যান্ডেলার বিখ্যাত উক্তি। এ উক্তিটি উদ্বৃত করে আজকের লেখা শেষ করব।

Destroying any nation does not require the use of atomic bombs or the use of long-range missiles. It only requires lowering the quality of education and allowing cheating in the examinations by the students.

এর মর্মার্থ হল : “একটি জাতিকে ধ্বংসের জন্য পারমানবিক বোমা বা দূরপাল্লার মিসাইল ব্যবহারের প্রয়োজন নাই। এটা করার জন্য ঐ জাতির শিক্ষার মানে অধোগতি আর ছাত্রদের পরীক্ষার হলে অসুদোপায় অবলন্বনের সুযোগই যথেষ্ট”। এর সরল সোজা ফলাফল হবে এ শিক্ষা ব্যবস্থা আর পরীক্ষা পাশ করা

শিক্ষকের হাতে গড়ে উঠবে অপদার্থ ছাত্রডাক্তারের হাতে অপচিকিৎসায় রোগী মরবে অদক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের কারণে ইমারত ভেঙে পড়বেমুর্খ অর্থনীতিবিদের হাতে অর্থনীতি দেউলিয়া হয়ে পড়বেদুর্বল বিচারকের হাতে বিচার ব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। এভাবেই একটি জাতি তার শিক্ষাব্যবস্থার গলদের মাশুল দিতে গিয়ে ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে যাবে।

লেখক : সামরিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে
পরবর্তী নিবন্ধশবে বরাত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় রজনী