চট্টগ্রামের মূলভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন উপজেলা সন্দ্বীপ। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও আধুনিক কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপের অন্যতম নৌরুট কুমিরা-গুপ্তছড়ায়। মান্দাতার আমলের লাল বোট-সার্ভিস বোট দিয়ে বছরের পর বছর ধরে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে সন্দ্বীপের চার লক্ষাধিক বাসিন্দা। ফলে প্রায় ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল লাল বোট কেড়ে নিয়েছে ১৮ টি তাজা প্রাণ যার শোক বয়ে যাচ্ছে আজও দ্বীপবাসী। ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল স্পিডবোট দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন বোনসহ মোট ৪ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। একটার পর একটা ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ১৯ আগস্ট ২০২২ সার্ভিস বোট হতে লাল বোটে নামতে গিয়ে সাগরে পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন ষাট বছরের বৃদ্ধা। একটি ঘটনারও সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি, হলেও এখনো কার্যকর হয়নি। ২০১৯ সালের ২৭ জুন লালবোটে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করাই দুই প্রবাসীকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে লাল বোট চালক। গত ছয় মাসে নানান অজুহাতে স্পিডবোটের ভাড়া ষাট শতাংশ বৃদ্ধি করে চারশত টাকা করা হয়েছে যা পকেট কাটারও নামান্তর। মালবাহি বোট হতে শুরু করে সার্ভিস বোট এবং স্পিড বোটের ভাড়া দফায় দফায় বৃদ্ধি করা হলেও সেবার মান বিন্দু মাত্রও বাড়ানো হয়নি। ডিজিটাল এ যুগে কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথে ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা (সীট্রাক, পর্যাপ্ত নৌযান, বয়াবাতি, লাইটিং এবং টিকিটিং সিস্টেম) না থাকায় দ্বীপবাসি খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত। এভাবে নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খলার অভাবে আর কত দুর্ঘটনায় কত মায়ের বুক খালি হলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে? চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌপথের কুমিরা-গুপ্তছড়াসহ সকল নৌরুটে নিরাপদ যাতায়াত ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সন্দ্বীপবাসীর প্রাণের দাবি।
মো: রবিউল আলম
মুছাপুর, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম।











